ব্যর্থতা

বিএনপির গত ১৫ বছরের ইতিহাস মানে ব্যর্থতার চরম ইতিহাস। চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে থেকেই দলের একক কর্তৃত্ব ছিল পুত্র তারেক রহমানের হাতে। খালেদা জিয়া তারেকের কথায় উঠতেন, বসতেন। তারেকের নির্দেশ ছাড়া তিনি এক পাও এগোতেন না। ২০১৪ সালের নির্বাচনে না গিয়ে সহিংসতা চালানোর মত হঠকারিতা, ২০১৮ সালে নির্বাচন কেন্দ্র করে মনোনয়ন বাণিজ্য আর বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, ২০২৪ সালে নানারকম হাস্যকর দাবির পেছনে ছুটে নির্বাচনে না যাওয়া- এ সবই বিএনপির রাজনীতির কবর রচনা করেছে। দলের প্রতিষ্ঠাতা স্বৈরশাসক জিয়ার সাথে রাজনীতি করা সিনিয়র নেতৃবৃন্দ একে একে দল ছেড়েছেন তারেক রহমানের উদ্ভট কর্মকাণ্ডে বিরক্ত হয়ে।

শেষ ভরসা বিদেশি কূটনীতিকরাও বিএনপির মাথার ওপর থেকে তাদের হাত সরিয়ে নিয়েছে। সবমিলে বিএনপি এখন অস্তিত্ব সংকটে। কর্মী-সমর্থকরাও চাইছেন দলের নেতৃত্বের পরিবর্তন। তবে কমিটি আর মনোনয়ন বাণিজ্যের ধান্দা ছেড়ে পদত্যাগ করার পাত্র নন তারেক রহমান। জানা গেছে, হতাশ কর্মীদের নয়-ছয় বুঝ দিতে লন্ডনে বসে দলে শুদ্ধি অভিযান চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন তিনি।

এই অভিযানে ছাঁটাই হতে পারেন অনেক নেতা, যাদের বলির বকরা বানানো হয়েছে। সকল ব্যর্থতা থেকে নিজেকে আড়াল করতে বলির বকরাদের ওপর দায় চাপানোর তোড়জোর চলছে।

জানা গেছে, বিএনপি যে নেতারা ২৮শে অক্টোবর থেকে ৭ই জানুয়ারি নির্বাচন পর্যন্ত আড়ালে আবডালে থেকে গা বাঁচিয়েছেন, কর্মসূচিতে যাননি, প্রকাশ্যে বা গোপনে সরকারের সাথে আঁতাত করেছেন, তাদের পদচ্যুত করা হবে। ইতিমধ্যে সেই তালিকা লন্ডনে পাঠানো হয়েছে। তালিকায় এমন কিছু সন্দেহভাজন ব্যক্তির নাম যুক্ত হয়েছে, যারা নাকি সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখেন। সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার বিনিময়ে এসব সংস্থাকে বিএনপির গোপন তথ্য দিয়েছেন বলে দাবি তারেকের।

আন্দোলনে আগ্রহ নেই বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের,সাড়া নেই জনগণেরও 

[নিজের রাজনৈতিক ব্যর্থতা ঢাকতে দলের নেতাদের বলির বকরা বানাচ্ছেন তারেক]

বিএনপির সব কর্মসূচিকে ব্যর্থ করার পেছনে এদের ওপর দায় চাপানো হবে। আরও আছেন কয়েকজন বিদ্রোহী নেতা, যারা টিভি ও প্রিন্ট মিডিয়ায় বিএনপির চরম সমালোচনা করে নেতা-কর্মীদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি করেছেন। বিশেষ করে তারেক রহমানের নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন যারা, তারাও বলির বকরা হচ্ছেন। পদ তো খোয়াবেন, দল থেকেও চিরতরে বহিষ্কার করা হবে এই নেতাদের। এদের মধ্যে সাবেক সেনা কর্মকর্তা এক নেতার নামও রয়েছে, যিনি নির্বাচনের আগে নিজেকে বঞ্চিত আখ্যা দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন।

মূলত নিজের রাজনৈতিক ব্যর্থতা আড়াল করতে এবং দলের পুনর্গঠনের নামে দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত এই নেতাদের ছাঁটাই করার মাধ্যমে সমালোচকদের মুখ চিরতরে বন্ধ করতেই লন্ডন পলাতক তারেক রহমান এমন গণছাঁটাই কর্মসূচি নিয়েছেন বলে জানান দলের সিনিয়র নেতারা। এমন কর্মকান্ড দলের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে মত তাদের।

আরও পড়ুনঃ