সাংগঠনিক ব্যর্থতা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করে ফেলেছে সরকার। শক্ত মন্ত্রিসভা গঠন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সবাইকে। সেখানে আন্দোলনের নামে গেরিলা কায়দায় ট্রেনে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, জ্বালাও-পোড়াও এর মতো কর্মসূচি গ্রহণ করে সফলতার ফসল ঘরে তুলতে পারেনি বিএনপি। বিদেশনির্ভরতা, সঠিক নেতৃত্বের অভাব ও মিত্রদের নিষ্ক্রিয়তা সবমিলিয়ে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে ভর করেও শেষ রক্ষা হয়নি দলটির।

সম্প্রতি এ বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

আরও পড়ুন : বিএনপি এক্সক্লুসিভ : পদত্যাগ করে দলের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে তারেককে পরামর্শ স্থায়ী কমিটির

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়বিএনপির এ প্রবীণ নেতা বলেন, ‘দেখুন দাবি আদায়ে ২০২৩ সালের মাঝামাঝি অবস্থান বিশ্লেষণ করলে আমরা ভালো একটি পর্যায়ে ছিলাম। তবে শেষ দিকে লন্ডন থেকে যেসব নির্দেশনা এসেছে তাতেই সব বুমেরাং হয়েছে। আর সেই সুযোগে জোরালো আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারার ব্যর্থতার কারণে সফলভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠান করে ফেলেছে আওয়ামী লীগ। বিএনপি রাজপথে যতটুকু কর্মসূচি পালন করতে সক্ষম হয়েছে তার পাল্টা কর্মসূচিতেও কৌশলগত দিক থেকেও এগিয়ে ছিল ক্ষমতাসীনরা। তবে আমরা আবারও নিজেদের গুছিয়ে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছি, এটাও সত্য।’

আরও পড়ুন : ব্ল্যাকহোলে বিলীন হওয়া বিএনপির করুণ পরিণতি

দলীয় নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে কিছুটা নীরব থেকে গয়েশ্বর বাবু উত্তর দেন। বলেন, সত্য বলতে আপনি যখন টানা ১৮-১৯ বছর ক্ষমতার বাহিরে থাকবেন, তখন একটু হলেও আপনার ভেতর হতাশা কাজ করবে, এটাই স্বাভাবিক। তবুও আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। সেই সংকল্প নিয়েই আমরা পুনরায় কাজ শুরু করেছি। তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা একদিন ক্ষমতার মসনদে বসবো সেই আশা আমাদের রয়েছে। আমি কর্মীদের নিরাশ হতে নিষেধ করি সবসময়।

এদিকে বিএনপির একান্ত মিত্র বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, ‘আন্দোলন করতে হয় বজ্রপাতের মতো ঝলকের গতিতে। তাহলে সফলতার কথা ভাবতে পারবেন আপনি। সেখানে বিএনপি যে গতিতে আন্দোলন করেছে তাতে তারা হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছে। আসলে ঈদের পর, পূজার পর, তফসিল ঘোষণার পর আন্দোলনসহ নানা আল্টিমেটাম দিয়ে রীতিমতো হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছে বিএনপি। আমি বার বার বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। নানান সুযোগ ও ইস্যু থাকা সত্ত্বেও জনস্বার্থ ঘিরে গণআন্দোলন করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। যদিও আমি দল থেকে বের হয়ে এসেছি।

আরও পড়ুন : What is Bangladesh Nationalist Party’s future after Khaleda Zia?

downloadআন্দালিব রহমান পার্থ মনে করেন, নিজ দল ও নেতাদের স্বার্থকেন্দ্রিক আন্দোলনে ব্যস্ত বিএনপির নেতারা। বক্তব্য বিবৃতিতে যতটা ‘বাঘ’, মাঠের আন্দোলনে ততটাই ‘বিড়ালের’ ভূমিকা প্রদর্শন করছে দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা।

[সাংগঠনিক ব্যর্থতায় নতুন কর্মসূচি দিতে পারছে না বিএনপি]

Partho-Khaledaপার্থ কিছুটা মজার ছলেই বলেন, ‘‘সরকার ও আওয়ামী লীগের শক্তি এবং কৌশল মোকাবিলায় ধোপে টেকেনি বিএনপি। এখন পর্যন্ত নিজেরা নির্বাচনে না আসাই আমার মনে হয় তাদের একমাত্র ‘সফলতা’। কিন্তু এটা তাদের ক্ষমতার স্বপ্ন থেকে আরও ছিটকে দিয়েছে। আসলে মাঠে না থেকে অফিসে বসে বসে ‘বাঘের মতো গর্জন’ দিলে মানুষ সেই দলের নেতাদের ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা ছাড়া আর কিছুই মনে করে না।’’

আরও পড়ুন :