দ্বাদশ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে রোববার (৭ জানুয়ারি)। নির্বাচনকে অবৈধ এবং পক্ষপাত বলে দাবি করে আসা বিএনপির জন্য শেষ আশার স্থান ছিলো নির্বাচনকে ঘিরে আন্তর্জাতিক সংস্থা, পর্যবেক্ষক ও কূটনৈতিক মিশনগুলোর স্টেটমেন্ট। দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিলো, বাংলাদেশের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ হতে পারে। সেই সঙ্গে এই সরকারকে দেশের জনগণ এবং আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর কেউ মেনে নেবে না বলেও দাবি করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিদেশি সংস্থা, পর্যবেক্ষক ও কূটনৈতিক মিশনগুলোর বক্তব্য আরও একবার দলটির জন্য হতাশার কারণ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কেননা সেখানে সরকারকে অবৈধ ঘোষণা বা অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ বা কূটনৈতিক সম্পর্কে বৈরিতা আনার কোন কিছুই বলা হয়নি। উল্টো সহিংসতার জন্য বিদেশি বন্ধুদের হারানোর পাশাপাশি জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি।

যুক্তরাষ্ট্র কম্বোডিয়ার জন্য যেই স্টেটমেন্ট প্রদান করেছে সেখানে বিরোধী দলের সংঘর্ষ ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়নি। সেখানে বেশ কিছু তথ্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হলেও বর্তমান সরকারকে অগ্নি সংযোগকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন : বিএনপিকে নিয়ে হাসাহাসি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও !

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এলিট ফোর্স র‍্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশনের পর থেকেই বিএনপির নেতা রিজভী থেকে শুরু করে রুমিন ফারহানা এমনকি তাদের লবিস্ট হিসেবে কাজ করে আসা মিলামা ও তার অনুজ জন ড্যানিলোভিজ সকলেই দাবি করে আসছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ব বিএনপির পক্ষে থেকে তাদের অগ্নি সংযোগ ও সকল কার্যক্রমকে সমর্থন দিয়ে যাবে এবং কম্বোডিয়ার মতোই আওয়ামী লীগ সরকার কোণঠাসা ও একা হয়ে যাবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের স্টেটমেন্ট একেবারেই ভিন্ন বার্তা দেয়া। যুক্তরাষ্ট্রের সেই বার্তার ব্যাখ্যায় ওয়াশিংটনভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) এর এশিয়া এবং বাংলাদেশ বিষয়ক জ্যৈষ্ঠ উপদেষ্টা জেফরি ম্যাকডোনাল্ড এক টুইটে লেখেন, বাংলাদেশের নির্বাচন সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেটমেন্ট: আওয়ামী লীগের বিজয়কে স্বীকৃতি প্রদান, কিছু প্রক্রিয়ার সমালোচনা, সহিংসতাকে নিন্দা জানানো এবং ভবিষ্যতে যুগপৎভাবে সহযোগিতার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গিকার।’

আরও পড়ুন : Bangladesh’s Growing Importance in Global Politics

সন্ত্রাসী বিএনপিসুতরাং বাস্তবিকভাবেই বলা যায়, দীর্ঘ ৩ বছরের বেশি সময় যাবৎ অনলাইনে ও অফলাইনে বিএনপি ও তাদের গুজবকারীরা যেই দাবি করে আসছিলেন, তার কোনটিই কার্যকর হয়নি যুক্তরাষ্ট্রের এই স্টেটমেন্টের মাধ্যমে। উল্টো সহিংসতার জন্য নিন্দা প্রকাশ করা হয়েছে যার অধিকাংশের সঙ্গে জড়িত ছিলো বিএনপি। বিশেষত চট্টগ্রামে নির্বাচনের দিন সরাসরি পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় দলটি।

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেটমেন্টের পাশাপাশি নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাজ্যের স্টেটমেন্ট আরও হতাশ করেছে দলটিকে। সেখানে যুক্তরাজ্য বেশ স্পষ্ট করে বলেছে, ‘নির্বাচনের আগে এবং নির্বাচনকালে বেশ কিছু ভয় দেখানো এবং সহিংসতার নিন্দা জানাই আমরা। রাজনৈতিক কার্যক্রমে এগুলো কোন স্থান নেই।

আরও পড়ুন : তারেক রহমান যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য ভয়ংকর ক্ষতিকর, গণতন্ত্রের হুমকি

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস (ওএইচসিএইচআর) থেকে আসা স্টেটমেন্টেও উঠে এসেছে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতার কথা। সেখানে বলা হয়, বিরোধী গ্রুপ থেকে অগ্নিসংযোগ সহ রাজনৈতিক সহিংসতার তথ্যও মিলেছে।

এর পাশাপাশি বিএনপির আশার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, রাশিয়া ও চীন সহ বিভিন্ন দেশের বক্তব্য যেখানে জনগণের রায়কে তারা মেনে নিয়েছে এবং আওয়ামী লীগ সরকারকে সমর্থন করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।

[সকল দেশ ও সংস্থার স্টেটমেন্টে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগকে সমর্থন, বিচ্ছিন্ন বিএনপি]

তারেক রহমান জনগণের ভোট বর্জনের কথা সগর্বে প্রচার করলেও বাস্তবতা হলো, বিএনপির নির্বাচন বর্জন এবং রাজনীতির নামে মানুষকে পুড়িয়ে মারা ও পুলিশ হত্যার বিষয়টি কোন দেশ সমর্থন করেনি। আওয়ামী লীগকে পুরো বিশ্ব অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা বিএনপি বর্তমানে তাদের সকল আন্তর্জাতিক সমর্থন হারিয়েছে এবং একা হয়ে গেছে। মূলত নিজেদের সহিংসতার কারণেই একা হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিজেও জানে বিএনপি। আর এ কারণেই তারা নির্বাচনের পর হরতাল ও অবরোধের মতো কর্মসূচি না করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করার ঘোষণা দিয়েছে। যদিও দলটির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতেও নেই জন সমর্থন।

আরও পড়ুন :