আন্দোলনে ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে মঈন খান ও রিজভীর দ্বন্দ্ব

আন্দোলনে ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে মঈন খান ও রিজভীর দ্বন্দ্ব 

নাশকতার মামলায় কারাগারে মির্জা ফখরুল, আমীর খসরু এবং মির্জা আব্বাস। দলে আরও সিনিয়র নেতৃবৃন্দআন্দোলনে ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে মঈন খান ও রিজভীর দ্বন্দ্ব থাকলেও সর্বেসর্বা হয়ে উঠেছেন রুহুল কবির রিজভী। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হয়ে উঠেছেন তিনি। লিফলেট বিলি থেকে ঝটিকা মিছিলে নেতৃত্ব, কখনো রাজপথ থেকে আত্মগোপনে গিয়ে ভিডিও বক্তব্য প্রদান, আবার তালা ভাঙার নাটক করে কার্যালয়ের দখল নিয়ে মিডিয়ার ফোকাসে।

কারো কারো মতে, পলাতক তারেক রহমানের কাছে নিজের গুরুত্ব তুলে ধরতেই রিজভী এসব করছেন। অথচ দলের জ্যেষ্ঠতা অনুসারে মির্জা ফখরুলের অবর্তমানে আবদুল মঈন খানেরই নেতৃত্ব দেয়ার কথা। যদিও কেউ কেউ বলেন, বিএনপিতে রিজভীর জনপ্রিয়তা যতটা, তার ছিটেফোঁটাও নেই মঈন খানের। এলিট শ্রেণির হওয়ায় তৃণমূলের সাধারণ কর্মীদের সাথে মঈন খানের রয়েছে ব্যাপক দূরত্ব। তাই তিনি অস্পষ্ট উচ্চারণে মাইকের সামনে বক্তব্য দিতে শুরু করলে রিজভীপন্থীরা এ নিয়ে হাসিঠাট্টা করেন। এসব মঈন খানের কানে যাওয়ায় তিনি এজন্য রিজভীকে দায়ী করেছেন বলে দলীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।

গতকাল বিএনপি কার্যালয়ে রমজানের আগে কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় মঈন খান প্রসঙ্গ উঠলে রিজভী মজা করে বলেন, মঈন খান কীসের নেতা? মজার ছলে বললেও মঈন খানের কানে গেছে কথাটা। এ নিয়ে সন্ধ্যার পর দুজনের মাঝে ব্যাপক কথা কাটাকাটি হয় বলে খবর রটেছে। কর্মীরা জানান, মঈন খান নিজেও তার সীমাবদ্ধতা সম্বন্ধে জানেন। কর্মীদের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নেই। এমনকি ঢাকা মহানগরীর উত্তর/দক্ষিণের অনেক সিনিয়র নেতাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন না মঈন খান।

কর্মীদের মাঝে অনেকদিন ধরেই প্রশ্ন, রিজভীকে কেন স্থায়ী কমিটির সদস্য করা হচ্ছে না, এত দায়িত্ব পালনrijbi করার পরেও কেন তার চেয়ে মঈন খান, নজরুল ইসলামদের ক্ষমতা বেশি দলে? মির্জা ফখরুলের অবর্তমানে কেন মঈন খঅন দলের পরিচালনার ভার হাতে নিয়ে বসে আছেন? কূটনীতিকদের সাথে আলাপ আলোচনার জন্য রিজভীকে কেন রাখা হয় না? এসব নিয়ে অসন্তুষ্টি দিনে দিনে দানা বাঁধছে। যেকোনো বিবেচনায় বিএনপিতে মির্জা ফখরুলের চেয়েও জনপ্রিয় হলেন রহুল কবির রিজভী। দলের জন্য তার ত্যাগ অবিসংবাদিত। রাজপথে, রাজনৈতিক বক্তব্যে, মিছিলের নেতৃত্বে- সর্বত্র রিজভীকে পাওয়া যায়। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নিজের বাড়ি ছেড়ে দলীয় কার্যালয়ে বসবাস শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু তৃণমূলের পালস বোঝেন না যিনি, সেই মঈন খানের হাতে দলের নিয়ন্ত্রণ দেখে কর্মীরাও ক্ষুব্ধ।

[আন্দোলনে ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে মঈন খান ও রিজভীর দ্বন্দ্ব]

বিএনপির দলত্যাগী সিনিয়র নেতা শাজাহান ওমর জানালেন, দলের জন্য যত ত্যাগই থাকুক না কেন, তারেক রহমানকে ‘জি হুজুর’ করতে না পারলে কারো ভাত নাই। রিজভী দলের জন্য অনেক করেছে, কিন্তু তারেক রহমানের আস্থাভাজন নন বলে তিনি এখনো পেছনে পড়ে রয়েছেন। বহুবার তাকে মহাসচিব করার প্রস্তাব উঠলেও মঈন খান, নজরুলদের মত এলিটরা বিরোধিতা করেছেন। এসব কারণেই বিএনপির রাজনীতি থেকে মন উঠে গেছে আমাদের।

তবে নজরুল ইসলাম খানকেও নিয়েও গুঞ্জন রয়েছে। তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠরা মনে করেন, নজরুল ইসলাম খানের সঙ্গে সরকারের গোপন আঁতাত রয়েছে, তিনি সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন। তার পরিকল্পনাতেই রিজভীর মত দায়িত্বশীল নেতাকে পেছনে রেখে মঈন খানদের মত রাজপথে নেতৃত্বদানে অক্ষমদের বিএনপির ফ্রন্টলাইনে আনা হয়েছে, এমন কথা শোনা যাচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ