
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে গ্রুপিং এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে কিছুদিনের মধ্যেই দলটি কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে যাবে বলে দলের নেতারাই প্রকাশ্যে বলাবলি করছেন।
গত এক মাসে কয়েকটি সভা-সমাবেশে দলের নেতাদের মধ্যে প্রকাশ্যে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য, ধাক্কাধাক্কির পর দলের বিভক্তির ব্যাপারে নেতারা কথা বলা শুরু করেন।
সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার অসুস্থতার সুযোগে দলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত
আছেন লন্ডন পলাতক আসামি তারেক রহমান। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হলেও কার্যত তিনিই এখন দল পরিচালনা করছেন। তবে তিনি বিদেশে পলাতক থাকায় বিএনপির ওপর পূর্ণ কর্তৃত্ব করতে পারছেন না। খালেদার অনুসারীরা তার নির্দেশ মানে না।
বিএনপির সিনিয়র এক নেতা বলেন, এই দুই ধারার বাইরেও দলে আরেক ধারার নেতা আছেন। যারা খালেদার অসুস্থতা এবং তারেকের দেশে না আসার সুযোগে মা-ছেলেকে বাদ দিয়ে বিএনপি দখলে নিতে চান। আছে মির্জা ফখরুল এবং রিজভীর পৃথক পৃথক সমর্থক গোষ্ঠী।
আবার গয়েশ্বর চন্দ্র, শামসুজ্জামান দুদু, মির্জা আব্বাস, আমানুল্লাহ আমানসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা অপেক্ষায় আছেন খালেদা জিয়ার কিছু একটা হলে দলের কর্তৃত্বের লড়াইতে নিজ নিজ সমর্থকদের নিয়ে এগিয়ে আসার।
[খালেদা অধ্যায়ের ইতি ঘটলে নিঃশেষ কিংবা ৪ ভাগ হয়ে যাবে বিএনপি]
মূলত কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতাদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব খুব চরমে পৌঁছে গেছে বলে বিএনপির নেতারা আশংকা করছেন অচিরেই দলটি ভেঙে তিন-চার ভাগ হয়ে যাবে।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দলের কিছু নেতার ক্ষমতা-লিপ্সার কারণে এসব হচ্ছে। আমাদের উচিত ম্যাডামকে মুক্ত করা, তারেক রহমানকে দেশে নিয়ে আসা। তা না করে কেউ কেউ নিজের লাভের জন্য দলাদলি করছে। এতে কিছু গ্রুপিং সৃষ্টি হয়েছে। আশা করি সবাই দ্বন্দ্ব ভুলে যাবেন। আমি আশাবাদী, হতাশ হয়ে লাভ নেই।
বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, তারেকের মতো অশিক্ষিত দিয়ে তো বিএনপির মতো এত বড় দল চলবে না। অনেক দিন থেকেই বলে আসছি। কিন্তু আমার কথা তো খালেদা জিয়া আমলে নিলেন না। তারেকের অতীত অপকর্মের জন্য দেশে-বিদেশে সে সমালোচিত।
আরো পড়ুনঃ নির্দয়-নৃশংস খালেদার প্রতি আর কতো মানবিক হবে সরকার?
ফলে তাকে দায়িত্ব দেওয়ায় বিএনপির সিনিয়র এবং ভালো নেতারা হতাশ হয়েছেন। এই অযোগ্য তারেকের আন্ডারে তারা কিভাবে কাজ করবেন? বিএনপি যে এতদিন ভাঙ্গে নাই সেটাই বরং বিস্ময়ের।
বিএনপি ভেঙে যাবে কি না জানতে চাইলে ২০ দলীয় জোটের এক নেতা বলেন, ভাই আমরা তো বিএনপি নিয়ে কথা বলতে পারি না, জোটের অভিজ্ঞতা থেকে বিএনপির ভাঙন আমার কাছে অস্বাভাবিক বলে কিছু মনে হয় না।
তারেক রহমানের একনায়কত্বের কারণে ২০ দলীয় জোট থেকে বেশিরভাগ দল বের হয়ে গেছে। বিএনপির মধ্যেও ভাঙনের আলামত দেখা যাচ্ছে। তারেক রহমানের অযোগ্যতাই এর মূল কারণ।
আরো পড়ুনঃ
- খালেদা জিয়াকে নিয়ে তারেকের মহাপরিকল্পনা
- খালেদা জিয়ার বহুল আলোচিত ১০টি অমানবিকতার ইতিহাস
- ফখরুল-রিজভীদের অপপ্রচারের হীন প্রচেষ্টার বলি খালেদা জিয়া ও বিএনপি
- খালেদা জিয়া ‘মৃত্যুশয্যায়’, পিকনিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা (ভিডিও)