দীর্ঘদিন ধরে পর্দার অন্তরালে থেকে সরকারকে বারবার বিপদে ফেলার চেষ্টা করছিলেন ধনাঢ্য আইনজীবী ড. কামাল হোসেন। তার জামাতা ডেভিড বার্গম্যানকে দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ সরকারকে হেয় করার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করেছেন তিনি। কিন্তু সাংবাদিকতার ছদ্মবেশে এসব প্রোপাগান্ডা ছড়াতে গিয়ে সম্প্রতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন বার্গম্যান। এরপর নিজেই প্রকাশ্যে চলে আসেন ড. কামাল। সম্প্রতি সমকালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. কামাল জানান, এই সরকারকে হঠানোর জন্য বৃহত্তর পরিসরে জোট গঠনের কাজ করছেন তিনি। এরপর, ২৯ আগস্ট, শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ ও জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানান বিএনপি সমর্থিত বুদ্ধিজীবী ড. জাফরুল্লাহ। এমনকি তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে, ৩০ আগস্ট, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাস্তায় সন্ত্রাস করার জন্য কর্মীদের ইন্ধন দিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।

রাজনৈতিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে, রাস্তায় ও মানুষের বাড়ি-ঘরে আবারো জ্বালাও-পোড়াও সন্ত্রাসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত জোট। সঙ্গে আগের মতোই আছেন গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল। তবে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শবিরোধী অবস্থানের কারণে তার দল ছেড়ে চলে গেছেন অনেক মুক্তিযোদ্ধা।

মূলত, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতকে নিয়ে ঐক্যজোট গঠন করেন ড. কামাল। কিন্তু নির্বাচনে পরাজয়ের পর ক্ষুব্ধ হন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ওপর। এরপর শেখ হাসিনা ও তার সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণার দায়িত্ব দিয়ে বেকার জামাই ডেভিড বার্গম্যানকে দায়িত্ব দেন বিএনপি-জামায়াতের লবিস্ট হিসেবে। বিদেশে বসে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণায় লিপ্ত হয় বার্গম্যান। এদিকে ড. কামালের মেয়ে ব্যারিস্টার সারা হোসেনের মাধ্যমে, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ও বিএনপি নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে বার্গম্যানের। তারেকের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানরা কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে বার্গম্যানের পেছনে। এরপর দেশাদ্রোহী ও পলাতক তাসনিম খলিলকে সঙ্গে নিয়ে নেত্রনিউজ নামে একটি প্রোপাগান্ডা ওয়েবসাইট খোলে বার্গম্যান।

এর আগে যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত জামায়াত নেতা মীর কাশিম আলীকে বাঁচাতে বার্গম্যানের মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ২৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছিল জামায়াত। এমনকি যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে বাঁচাতেও অনেক টাকা খরচ করেছে তার পরিবার। শুধু রায়ের একটি কপি ফাঁস করানোর জন্যই একরাতে খরচ করেছে দেড় কোটি টাকা। মীর কাশিম আলীর পুত্র এবং সাকা চৌধুরীর পুত্র হুম্মামই এখন বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণার জন্য অর্থ জোগান দিচ্ছেন ড. কামালের জামাই বার্গম্যানকে।

এদিকে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অস্থির করার ষড়যন্ত্রও চূড়ান্ত হয়েচে। ড. কামালের হয়ে এই বিষয়টি দেখভাল করছেন নাগরিক ঐক্যের নেতা মাহামুদুর রহমান মান্না। এর আগে, সরকারবিরোধী আন্দোলন চাঙ্গা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দুয়েকটা লাশ ফেলার নির্দেশ দিয়ে আটক হয়েছিলেন তিনি। মূলত, ভাইবারে ফোনালাপের মাধ্যমে এই লাশ ফেলার নির্দেশ দেন মান্না। কিন্তু গোয়েন্দারা সোচ্চার থাকায় তার কলটি ফাঁস হয়ে যায়। এবার নতুন করে একই কায়দায় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা সৃষ্টির দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। তবে সামনে রেখেছেন নুরকে। আর এই নুরের ওপর আস্থার কারণ হলো, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান পণ্ড করতে তার পারফরম্যান্স। মূলত মোদীবিরোধী আন্দোলনের ছদ্মবেশে হেফাজত ও বিএনপি-জামায়াতের শরিক জোটের যুব সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজধানীতে পুলিশের সঙ্গে হট্টগোলে লিপ্ত গন নুর। পরে সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে তাণ্ডব চালায় হেফাজত। এমনকি হেফাজতের মামুনুল হককে নারীসহ আটকের পরও নুর ফেসবুক লাইভ করে তার পক্ষে বক্তব্য দেন এবং জঙ্গিবাদের পক্ষে অবস্থান নিতে কৌশলে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করেন। একারণে সামনে নুরের মাধ্যমেই কৌশলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঠে নামিয়ে একটা নাশকতার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।