আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে হেফাজতে ইসলামের আমীরের পদ থেকে সরিয়ে দিতে হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী নিজস্ব একটি বলয় তৈরি করেছিলেন। হেফাজত আমীর হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরীর প্রধান খাদেম এনামুল হক ফারুকী আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য দেন।জবানবন্দিতে তিনি আরও বলেন, মাদ্রাসা পরিচালনার বিষয়কে কেন্দ্র করে বাবুনগরীর সাথে আহমদ শফীর দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করে। মাদ্রাসায় ১০৮ ছাত্রের ভর্তির বিষয়কে কেন্দ্র করে সাধারণ ছাত্রদের ক্ষেপিয়ে তুলে বাবুনগরীর অনুসারীরা। আহমদ শফী মারা যাবার তিনদিন আগে নিজের অনুসারীদের নিয়ে গোপনে বৈঠকও করেছেন জুনায়েদ বাবুনগরী। বৈঠকে আহমদ শফীকে হেফাজতের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়া ও সাধারণ ছাত্রদের শফী বিরোধী আন্দোলন কিভাবে ক্ষেপিয়ে তোলা যায় তা আলোচনা হয়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শফীপুত্র আনাস মাদানীকে হেফাজত থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। শফীর মৃত্যুর দুইদিন পর জুনায়েদ বাবুনগরী মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক এবং একমাস পর হেফাজতের আমীর নিযুক্ত হন। মাদ্রাসা এবং হেফাজত থেকে সরিয়ে দেয়া হয় আহমদ শফীর অনুসারীদের।

জবানবন্দিতে বাবুনগরীর প্রধান খাদেম বলেন,পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২০ সালের ১৭ অক্টোবর বাবুনগরী ও তার অনুসারীদের নিয়ে আহমদ শফীর সাথে মাদ্রাসায় বৈঠক করেন। ওই বৈঠক থেকেই আনাস মাদানীকে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরদিন সকালে শাহ আহমদ শফি মাদ্রাসার শিক্ষকদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকলে বাবুনগরীর নির্দেশে আন্দোলনরত ছাত্রদের ক্ষেপিয়ে তোলে বৈঠক বানচাল করে দেয়া হয়। ওইদিন বিকেলে আহমদ শফির কক্ষে মাদ্রাসার সুরা সদস্য মহিবুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা নোমান ফয়েজী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেপুরী ও ওমর ফারুক বৈঠক করে শফিকে পদত্যাগ করতে প্রস্তাব দেন। শফি রাজী না হলে তার কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। এক পর্যায়ে শফিকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। মাওলানা শেখ আহমদ ও নোমান ফয়েজী ‘শফী স্বেচ্ছায় পতদত্যাগ করেছে’ এমনটি ঘোষণা দেন মাইকে। এরমধ্যে শাহ আহমদ শফি অসুস্থ হয়ে পড়লে বাবুনগরী ও তার পক্ষের লোকজনের উস্কানিতে আন্দোলনরত ছাত্ররা চিকিৎসার জন্য শফিকে বাইরে নিতে বাধা দেয়।