
স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে, রাতের অন্ধকারে, হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমভাবে খুন করেছে যে ব্যক্তি- তার নাম জিয়াউর রহমান। এমনকি দুঃসময়ে যারা তার প্রাণ বাঁচিয়েছেন, তার সংসার বাঁচিয়েছেন; তাদেরও হত্যা করেছে সে। বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাসে নতুন মীরজাফর বলা হয় এই জেনারেলকে। এমনকি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালেও বারবার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে মেজর জিয়া। তার সন্দেহজনক কাজকর্মের কারণে, প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানী তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।
এদিকে, মুক্তিযুদ্ধের পর স্ত্রী খালেদা জিয়াকে নিয়ে আর সংসার করতে চায়নি সে। কিন্তু ঘরে ছোট সন্তান থাকায়, বঙ্গবন্ধু নিজে তাদের সেই সংসারের ভাঙন রোধ করেন। জিয়াউর রহমানকে ডাবল প্রমোশন দিয়ে খালেদা জিয়ার সংসার বাঁচিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। এমনকি উপ-সেনাপ্রধান হিসেবেও নিয়োগ দিয়েছিলেন জিয়াকে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর হত্যার সব তথ্য তার কাছে থাকার পরেও, তা থামানোর চেষ্টা করেনি জিয়াউর রহমান। উল্টো খুনিদের এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল।
পরবর্তীতে এক সামরিক অভ্যুত্থানের হাত থেকে জিয়ার প্রাণ বাঁচান কর্নেল তাহের। কিন্তু ছাড়া পেয়েই প্রহসনের বিচারে তাহেরকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করে সে। রাষ্ট্রপতি সায়েমের কাছ থেকে অস্ত্রের মুখে ছিনিয়ে নেয় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা। এরপর রাতের অন্ধকারে নিয়মিত হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে বিশ্বাসঘাতক জিয়াউর রহমান। নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি মুক্তিযোদ্ধা ও সেনা সদস্যকে খুন করে সে। একাত্তরের খুনি ও ধর্ষক রাজাকারদের এমপি-মন্ত্রী বানিয়ে, তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দেয়। বিদেশে রাষ্ট্রদূতের চাকরি দেয় বঙ্গবন্ধুর খুনিদের। ইনডেমনিটি আইন পাশ করে বঙ্গবন্ধু হত্যার পথ রুদ্ধ করে।
ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে সৃষ্টি করে নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী। নষ্ট করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিবেশ। সদ্য স্বাধীন একটা দেশকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য, যা করা দরকার, সব চেষ্টাই করেছে সে। তাই খুনি ও বিশ্বাসঘাতক জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের দাবি ক্রমেই তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সন্মান জানানোর জন্য, তার খেতাব বাতিল করাও এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।