
আর্থিক কেলেংকারীর কারণে সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হকের নুরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে ছাত্র-যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের ভেতরে। অভ্যন্তরীণ ফেসবুক গ্রুপে প্রকাশ্যেই এই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, বিভিন্ন সময় আন্দোলনের নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উস্কে দেন নুরুল হক নুর। কর্মীদের মাঠে নামিয়ে দিয়ে আন্দোলনের নামে টাকা তোলেন তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে। সেই টাকার অংশ কর্মীদের দেন না, এমনকি এসব টাকার হিসাবও দেন না কাউকে। এভাবে সংগ্রহ করা অর্থ দিয়ে বেনামে গড়ে তুলছেন সম্পদের পাহাড়। সম্প্রতি একটি গাড়িও কিনেছেন তিনি।
ছাত্র-যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের একজন ক্ষুব্ধ কর্মী সম্প্রতি তাদের গ্রুপে লিখেছেন: কেউ মরে বিল সেঁচে, কেউ খায় কই। কেউ রাজনীতি করে জেল খাটে, আর কেউ বাড়ি গাড়ির মালিক হয়।
ছাত্র অধিকার পরিষদের একাধিক গ্রুপে এসব নিয়ে মুখ খুলছেন নুরের সতীর্থদের একটা বড় অংশ। তারা বলছেন, নাগরিক অধিকার আদায়ের একটি প্ল্যাটফর্ম হতে পারতো তাদের সংগঠনটি। জনগণ একসময় অন্ধের মতো তাদের বিশ্বাস করতো। কিন্তু নুর এবং রাশেদ-ফারুকদের বিভিন্ন রকম অপকর্মের কারণে সংগঠনটি এখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে সম্প্রতি জানা গেছে, ছাত্র অধিকার পরিষদের গোপালগঞ্জ শাখার এক নেতার টাকাও মেরে দিয়েছেন নুর-রাশেদ-ফারুকরা। এর আগে, আন্দোলনে অংশ নেওয়া এক নারী সহকর্মীকেও ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল তাদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি এখন আদালতে বিচারাধীন পর্যায়ে রয়েছে।মামলা করার আগে, নুরের কাছে বিচার দিয়ে উল্টো হুমকির শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
এদিকে, গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক তাওহীদ শেখ ফেসবুক লাইভে এসে তার টাকা আত্মসাতের তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন। এসময় তিনি জানান, ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান তার কাছ থেকে ব্যবসার কথা বলে ২৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। আর ফেরত দিচ্ছেন না। উল্টো ঢাকায় ডেকে নিয়ে হয়রানি করেছেন এবং হুমকি দিয়েছেন। নুরের কাছে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি।
কর্মীদের অভিযোগ, ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে নুর-রাশেদ-ফারুকরা যেসব অনুদান তোলেন, সেসব টাকার কোনো হিসাব নেই। এমনকি নিজেদের মধ্যে এসব টাকার বণ্টনকে কেন্দ্র করে একাধিকবার গণ্ডগোলও হয়েছে। রাশেদ ও ফারুকের বিরুদ্ধে সংগঠনের কয়েকলাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছিল আগেও। এনিয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হয়। কিন্তু নিজের ভাগ ঠিক রাখার স্বার্থে নুর কখনো এসব অনিয়মের ব্যাপারে কোনো কথা বলেন না। এমনকি ডাকসুর সাবেক ভিপি পদের পরিচয়কে ব্যবহার করে বিদেশ থেকেও টাকা সংগ্রহ করছেন নুর। মূলত সংগঠন পরিচালনা ও আন্দোলনের নামে এসব অর্থ সংগ্রহ করেন নুর। তবে তার পুরোটার যায় নিজের পকেটে।