
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের সমাবেশ থেকে গণবিরোধী ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। সমাবেশ বিশাল ছিল, সন্দেহ নেই। মাত্র ৩ বছর আগে গঠিত হেফাজতে ইসলাম নামের একটি সংগঠন এ সমাবেশের ডাক দেয়। বিএনপি নেতৃত্ব সমাবেশ সফল করে তোলায় সক্রিয় ভূমিকা রাখে। এ সমাবেশের দুই দিন আগে (৩ মে) খালেদা জিয়া একই স্থানে সমাবেশ ডেকে শেখ হাসিনাকে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের দাবি মানার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। বিএনপি-র নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ও ‘ইসলামী দলগুলোর’ জোট হেফাজতে ইসলামী সমঝোতা করেই অগ্রসর হচ্ছিল।
খালেদা জিয়ার ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষ হতে না হতেই হেফাজতে ইসলামের শত শত জঙ্গি কর্মী দিনভর জ্বালাও-পোড়াও-ভাংচুর চালানোর পর সন্ধ্যায় হেফাজতে ইসলাম নেতারা ঘোষণা দেয় অনির্দিষ্টকাল তারা শাপলা চত্বরে অবস্থান ধর্মঘট পালন করবে। সে সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম হেফাজতে ইসলামীর সমর্থকদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাপলা চত্বর ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানালে আল্লামা মামুনুল হক উত্তরে বলেন- “একটু পর আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরাই পালানোর পথ পাবে না।”
শাপলা চত্বরের সমাবেশ থেকে উদ্দেশ্য হাসিল করতে না পেরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট (২০ দলীয় জোটের সূচনা জোট) ৮ ও ৯ মে দেশব্যাপী হরতাল আহ্বান করে। হেফাজতে ইসলামীর ব্যানারে হরতাল ডাকা হয় ১২ মে। আইন শৃংখলা বাহিনী ন্যূনতম শক্তি প্রয়োগ করে হেফাজত সমর্থকদের প্রায় বিনারক্তপাতে বিতাড়ণ করে দেয়। তবে জমায়েতে অংশগ্রহণকারীদের পালিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশ-র্যাব ইত্তেফাক-জুড়াইন-পোস্তগোলা-নারায়ণগঞ্জ পথটি খোলা রেখেছিল। ৬ মে এই এলাকা, বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের কয়েকটি মাদ্রাসা থেকে কিছুসংখ্যক ছাত্রনামধারী সন্ত্রাসী যানবাহন ভাংচুর করে এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা চালায়।