দূতাবাসের

এবার সরাসরি বিশেষ দূতাবাসের প্রেসক্রিপশনে ডঃ ইউনুস ও খালেদ মুহিউদ্দিন

বান্ধবী হিলারির ইসারাইলের পক্ষে সরাসরি অবস্থান ও গাজায় ইসরাইলের গণহত্যার বিষয় ধামাচাপা দিতেই ইউনুসকে নিয়ে টকশো করলেন খালেদ !

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দণ্ডিত নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস এখন প্রকাশ্যে সরকারের বিরোধিতায় নেমেছেন। সম্প্রতি তিনি ও তাঁর কন্যা দেশে ও দেশের বাহিরের বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সরকারের কার্যকলাপ ও বাংলাদেশ বিচার ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন? বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও মার্কিন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ পশ্চিমা মিত্রদের ইসরাইলসফ বিভিন্ন ইস্যুতে সমর্থন করেই এবার তাদের মদদে নিজেকে বাঁচাতে এভাবে সরকার ও বিচার ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলছেন ইউনূস।

সম্প্রতি জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চেভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শান্তিতে নোবেলজয়ী ইউনূস সরকারের বিভিন্ন বিষয়ের সমালোচনা করেন।

গণতন্ত্র নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কেউ গণতন্ত্রের বিপক্ষে না, আমরাইউনূস এবার সরাসরি বিশেষ দূতাবাসের প্রেসক্রিপশনে ডঃ ইউনুস ও খালেদ মুহিউদ্দিন গণতন্ত্রের পক্ষে, মানবাধিকারের পক্ষে, ন্যায়নীতির পক্ষে৷ এগুলো না থাকলে তো জাতি হিসেবে আমরা টিকে থাকব না৷ তবে মুখ খুলে মানুষ গণতন্ত্রের কথা বলতে পারছে না বলে জানান এই অর্থনীতিবিদ ৷ তাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, আমার মনে হয় উনি মনে করেন, আমি দেশের সর্বোচ্চ ডাকু, সন্ত্রাসী কিংবা আমি অপরাধী, সেরা চোর৷ আমাকে বলেন— আমি সুদখোর, ঘুষখোর৷

আরও পড়ুনঃ ইউনূসের অবতারণা কি গাজায় ইসরাইলের গণহত্যাকে সমর্থনকারী বান্ধবী হিলারিকে বাঁচাতেই ?

কর ফাঁকি দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, আমার টাকা, আমি রোজগার করি, আমি নিজে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি মালিক হব না৷ যেহেতু আমি মালিক হব না, তাই আমি ট্রাস্টে দিয়ে দিতে চাচ্ছি৷ আমাদের আইনজীবী বলেছেন, আপনি যেহেতু দান করছেন, এটাতে আর কর দেওয়ার কোনো বিষয় নেই৷

এছাড়া সাক্ষাৎকারে সরকারের পররাষ্ট্র নীতিররও সমালোচনা করেন ইউনূস। নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, মিয়ানমারের বন্দুকের গুলি যখন গায়ের ওপর লাগছে, ঘরের কাছে পড়ছে, এটা খুব ভালো লক্ষণ নয়। বাংলাদেশের সীমান্তে বলে মিয়ানমারে সৃষ্ট সংকটের জন্য আমরা বহুলভাবে সাফার করব। লক্ষণ থাকতে থাকতেই সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে।

“ওয়ান ইলেভেন” পরবর্তী ঘটনা প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, যদি (রাষ্ট্র পরিচালনা করতে) চাইতাম, তাহলে যখন মিলিটারি আমার বাসায় এসে বসে রইলো সারারাত আমাকে রাজি করানোর জন্য, আমিতো লুফে নিতাম!

২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের তখন গ্রেফতার করে কারাগারে আটকে রাখা হয়।

উইকিলিকস থেকে ফাঁস হওয়া গোপন নথিতে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের প্রধান দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকেউইকিলিকস নির্বাসনে পাঠাতে চেয়েছিলেন এই নোবেলজয়ী। জেনারেল মইন ইউ আহমেদের লেখা বই এবং আরও কিছু নথি থেকে এটি স্পষ্ট ছিল যে, ১-২ বছরের জন্য নয়, বরং দীর্ঘ মেয়াদে অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক সরকার গঠনের জন্য ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন ড. ইউনূস।

এর আগে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনে সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন  ড. ইউনূসের কন্যা ও মার্কিন নাগরিক মনিকা ইউনুস।

সিএনএনের সাংবাদিক ক্রিস্টিন আমানপোরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন এই নাগরিক তাঁর বাবার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে মনিকা বলেন, অভিযোগগুলো মূলত তার কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত, যেটা সাধারণভাবে দেওয়ানি আদালতেই নিষ্পত্তি সম্ভব। কিন্তু এগুলোকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অর্থহীন। ড. ইউনূস ও তার সহকর্মীরা শতভাগ নির্দোষ। আন্তর্জাতিক আইনজ্ঞরাও বিষয়টি যাচাই করেছেন। তারাও বলেছেন, এই অভিযোগগুলো ‘বানোয়াট’।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন,  মনিকা ইউনূস যে কথাটা বলতে চাচ্ছেন, তাতে পরোক্ষভাবে উনি স্বীকার করেই নিয়েছেন যে, এখানে শ্রম আইন লঙ্ঘন হয়েছে। শ্রম আইন ২০০৬ ও বিধিমালা ২০১৫ আইএলও কর্তৃক স্বীকৃত এবং সেখানে ফৌজদারি একটা আলাদা চ্যাপ্টার আছে।

এদিকে  ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে দাবি করা হলেও আসলে এই ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো সরকারিভাবে। ১৯৮৩ সালে রাষ্ট্রপতির অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে একটি সংবিধিবদ্ধ সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে গ্রামীণ ব্যাংক। আর ড. ইউনূস ছিলেন এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সরকারের নিযুক্ত ও বেতনভুক্ত একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক; কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠাতা নন তিনি।

গ্রামীণ ব্যাংক নারীদের ঋণগ্রস্ত করে তুলছে এবং ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে অনেকে আত্মহত্যা পর্যন্ত করেছেন, এমন অভিযোগগুলোর বিষয়ে সাক্ষাৎকারে মনিকার কাছে জানতে চাওয়া হলে জবাবে তিনি বলেন, ক্ষুদ্রঋণ সুনির্দিষ্ট একটি মডেল, যা সঠিকভাবে অনুসরণ করা না হলে অন্য যেকোনো জিনিসের মতোই তা ব্যর্থ হতে পারে। অর্থাৎ যারা আত্মহত্যা করেছে তাঁরা নিজেদের ভুলের কারণেই করেছে বলে মত দিয়েছেন তিনি।

এদিকে সাক্ষাৎকারে একাধিকবার ড.ইউনূস কেন বাংলাদেশ সরকারের প্রতিহিংসার শিকার তা জানতে চাইলেও এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি মনিকা। আর আইনের যে সকল অসঙ্গতিকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে এই মামলাকে প্রতিহিংসা পরায়ণ দাবি করা হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা সহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি না দিয়ে কেনো প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি প্রদান করা হচ্ছে না এ বিষয়েও কোন ব্যাখ্যা মেলেনি ইউনূসের পক্ষে কাজ করে যাওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে। মনিকাও এ বিষয়ে কোন মন্তব্য না করে বরং আইন ও নির্বাহী বিভাগের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাধীন বিচার বিভাগের মুখোমুখি দাড় করানোর চেষ্টা করছে সকল মহল।

হিলারিদের সমর্থনেই কি সরকারের বিরোধিতায় ইউনূস

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে চলা আইনি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে নানাভাবে চলছে আন্তর্জাতিক লবিং। তাকে ‘আইনি হয়রানি’ বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টে বিজ্ঞাপন হিসেবে একটি যৌথ বিবৃতি ছাপা হয়েছে, যে বিবৃতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ১২ জন সিনেটর। এর আগে বিচার বন্ধে এমনই বিজ্ঞাপন আকারে বিবৃতি দিয়েছেন কয়েকজন নোবেলজয়ী। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে ইউনূসের পরিচিত আছে। আর এসব লবিং, বিবৃতি ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিচার বন্ধের আহ্বানকে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর চাপ প্রয়োগ ও হস্তক্ষেপের সামিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুনঃ মিথ্যেবাদী রাখাল বালক ইউনূস এবং তার হিলারি-ওবামা জুজুর ভাঁওতাবাজি!

মানবাধিকার রক্ষার নামে গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে যাচ্ছে আমেরিকার জো বাইডেন প্রশাসন। যার মাধ্যমে তারা ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যাকে অনুমোদন দিচ্ছে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি তৃতীয়বারের মতো জাতিসংঘে গাজার যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ভেটো দেয় আমেরিকা। আর এরমাধ্যমে বাইডেন প্রশাসনের দুমুখো নীতি আরও প্রকাশ্যে এসেছে। দেশটি ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকারকে তোয়াক্কা না করলেও বাংলাদেশের মানুষের মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার।

অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি বাহিনীকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে রুল জারি না করার জন্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

[এবার সরাসরি বিশেষ দূতাবাসের প্রেসক্রিপশনে ডঃ ইউনুস ও খালেদ মুহিউদ্দিন]

সম্প্রতি ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে জনসাধারণের তোপের মুখে পড়লেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন। বাংলাদেশের নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বন্ধু হিসেবে পরিচিত হিলারি গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বার্লিনে ওয়ার্ল্ড ফোরাম ইভেন্টে বক্তব্য রাখেন। সেখানে গাজা ইস্যুতে ইসরায়েলের পক্ষ নেওয়ায় সাধারণ দর্শকরা তাঁকে যুদ্ধাপরাধী ও ভণ্ড বলে দুয়ো ধ্বনি তোলেন।

অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিল জার্মানির বেসরকারি সংস্থা সিনেমা ফর পিস। সেখানে গাজায় হাজার হাজার মানুষ নিহত হওয়ার বিষয়ে ক্লিন্টন বলেন, অবশ্যই, আমি এতে অবাক হইনি কারণ যুদ্ধে এমনটি ঘটে।হিলারির বক্তব্য শুনে এক দর্শক বলেন, ‘ইসরায়েল তাদের রক্ষা করছে না। তারা গণহত্যা চালাচ্ছে। যার জন্য আপনারা অর্থ দিচ্ছেন। আবার আপনারা নারী অধিকার নিয়ে কথা বলেন? আপনারা কী এ নিয়ে সিরিয়াস? কীসের নারীর অধিকার নিয়ে কথা বলছেন।

আরেক দর্শক হিলারিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি শত শত পাকিস্তানিকে হত্যা করেছেন। আপনি আফগানিস্তান,ইরাকসহ মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে সমর্থন দিয়েছেন। আপনি যুদ্ধাপরাধী। আপনি ভণ্ড। লজ্জা করে না আপনার।’

অন্যদিকে, বাংলাদেশ গাজায় নারী-শিশুসহসহ নিরীহ বেসামরিক হত্যার নিন্দায় অটল রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে আগ্রাসন ও যুদ্ধ বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে বিশ্বকে অবিচলভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের প্রস্তাবিত দুটি রাষ্ট্রের তত্ত্ব বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রতি একটি পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করেছে যা্র মাধ্যমে শেখ হাসিনার বিরোধিতাকারী শক্তিগুলোর প্রতি সরাসরি সমর্থন দেখাচ্ছে। আর এতেই একের পর এক সরকারবিরোধী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে ইউনূস ও তাঁর কন্যা।

 

আরও পড়ুনঃ