ইউনূস

অনেকে বলেন নোবেলজয়ী ড. ইউনূস বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছে। কিন্তু এই নক্ষত্র ইউনূসকে কি কখনো দেখেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে? কখনো কি দেখেছেন বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে তিনি জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়েছেন? তিনি কি কখনো শহিদ মিনারে গিয়েছেন ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে? তার দেশপ্রেমের ক্ষুদ্রতম একটি উদাহরণ কি দেখানো যাবে?

তাহলে একজন দেশপ্রেমিক কেন তাকে সমর্থন করবে?

40243124_279988015948142_8132780648130674688_nএখন যারা ড. ইউনূসের সমর্থক, তাদের বড় একটি অংশ একসময় তারই বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিল। বিভিন্ন ওয়াজে ইউনূসের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হতো। ইসলামী দলগুলোর ভাষ্য ছিল – ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ সুদ-এর কারবার করেন ইউনূস। ক্ষুদ্রঋণের নামে দেশের দরিদ্র জনগণকে সুদের ভিক্টিমে পরিণত করছেন ইউনূস। যারা ইসলামের জন্য জানমাল কোরবানের কথা বলেন, তারাই কিন্তু সমকামিতাকে সমর্থন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় নৈতিক ও আর্থিক সহযোগিতা দেওয়ার জন্য ইউনূসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিলেন।

আরও পড়ুন : গোপন তথ্য ফাঁস – হিলারির তদবিরেই ইউনূস নোবেল পান

কিন্তু এখন দৃশ্যপট বদলে গেছে! জামায়াত-শিবিরের মত ধর্ম ব্যবসায়ীলা এখন ইউনূসের ভক্ত। ভক্তি প্রকাশ করে তারা ইউনূসের সঙ্গে ফটোসেশন করে এবং তা প্রচার করে। কেন করে? এখন কি সুদ হালাল হয়ে গেছে? এখন কি তারা সমকামিতা আন্দোলনের পক্ষে? নাকি এটা তাদের মোনাফেকি? ইসলামী চেতনার কথা বলা কেউ কি তাকে সমর্থন করতে পারে?

YPনতুন প্রজন্ম নাও জানতে পারে – ২০০৭ সালে ইউনূস দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে হঠাতে মাইনাস টু ফর্মুলায় একাত্মতা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ থেকে নাগরিক শক্তি নামে একটি দল গঠনের ঘোষণা দিয়ে জনগণের সমর্পণ চেয়েছিলেন। কিন্তু জনগণ তাকে প্রত্যাখ্যান করে। বিবৃতি দিয়ে গঠন করা দলটির বিলুপ্তি ঘটে বিবৃতি দিয়েই।

জামায়াতের কথা বাদ দিলাম। যারা নিজেদের বিএনপির ত্যাগী-পরীক্ষিত নেতা-কর্মী দাবি করেন, যারা খালেদা জিয়ার সৈনিক পরিচয় দেন নিজেদেরকে, তারা কীভাবে তাদের নেত্রীকে মাইনাসের নেপথ্য কারিগরকে সমর্থন করতে পারে? নাকি তারা এখনো মাইনাস ফর্মূলায় বিশ্বাসী, খালেদা জিয়াকে আর রাজনীতিতে দেখতে চান না?

আরও পড়ুন : জাতীয় নির্বাচন : ইউনূসের অর্থায়নে নাশকতার ছক বিএনপির নেতাদের

বিশ্বের নোবেলজয়ীরা বিপুল অর্থসম্পদের অধিকারী না হয়েও পুরস্কারের টাকা দেশের কল্যাণে ব্যয় করেছেন। ইউনূসের এত টাকা! পুরস্কারের টাকা ছাড়াও সুদ, মুনাফা, সিএসআর ফান্ড, শ্রমিকদের অপরিশোধিত মজুরি, করফাঁকিসহ তার অর্থ উপার্জনের উৎসের অভাব নেই! অন্য দেশের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী ফান্ডে তিনি বিপুল অর্থ অনুদান হিসেবে দিয়ে উদারতার পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু দেশের কোনো দুর্যোগ বা সংকটে তিনি কি কখনো সহায়তার হাত প্রসারিত করেছেন? রোহিঙ্গা সমস্যা, করোনা মহামারী ও বন্যাসহ দেশের প্রয়োজনে কি কখনো তাকে মানবতার পক্ষে দাঁড়াতে দেখা গেছে? download e1693483961790 একজন বিবেকবান ও দেশপ্রেমিক মানুষ কেন ড. ইউনূসকে সমর্থন করবে?

তাহলে মানবাধিকার নিয়ে উদ্বিগ্ন মানুষ কেন তার প্রতি সমর্থন জানাবে?

শ্রমিকদের ১২শ কোটি টাকা পরিশোধ না করায় তার বিরুদ্ধে শ্রম আইনে মামলা হয়েছে। মামলা হওয়ার আগে তিনি শ্রমিকদের কথা ভাবেননি। মামলার পর ৪৬০ কোটি টাকায় সমঝোতা করার চেষ্টা করেছেন।
তাহলে দেশের খেটে খাওয়া মানুষ কেন তাকে সমর্থন করবে?

[একজন বিবেকবান ও দেশপ্রেমিক মানুষ কেন ড. ইউনূসকে সমর্থন করবে?]

জোবরা গ্রামের সুফিয়াকে ২০ টাকা ঋণ দিয়ে সূচনা হয়েছিল ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণের কার্যক্রম। পরবর্তীতে সুফিয়া আরও ঋণ নিয়ে দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হয়েছেন। যদিও বিশ্ববাসী জেনেছে তার বাড়ির পাশের দোতলা বাড়িটি সুফিয়ার স্বাবলম্বী হওয়ার উদাহরণ! প্রকৃতপক্ষে সেই বাড়িটি ছিল অন্য আরেকজনের। বিদেশিদেরকে মিথ্যা বলা হয়েছিল। সেই দরিদ্র সুফিয়ার মৃত্যু হয় বিনা চিকিৎসায়। তার মত লাখো নারী ক্ষুদ্রঋণের টাকা পরিশোধে নিঃস্ব হয়ে গেছে। কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে কেউ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন, কেউ বেছে নিয়েছেন পতিতাবৃত্তি। তাহলে দেশের হতদরিদ্রদের জন্য সহানুভূতিশীল কোনো মানুষ কেন ইউনূসকে সমর্থন করবে?

আরও পড়ুন : বিএনপি সাদা হাতিদের উপর নির্ভর করে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে

বাংলাদেশের একজন বিবেকবান নাগরিক কেন ইউনূসকে সমর্থন করবে?

আরও পড়ুন :