
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের ছোটাছুটি নজরে এসেছে দেশের সাবেক কূটনীতিক, সাংবাদিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের।
গত ১৪ই ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবসে তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবিদের প্রতি শ্রদ্ধা না জানিয়ে গুম হওয়ার দাবি করা বিএনপি নেতার বাসায় যান। এই ঘটনার পর থেকেই তার চলাচল নজরে রাখছেন দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে পিটার হাসের মাথাব্যথা আরো স্পষ্ট বোঝা গেলো যখন তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে দুবার করে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে এবং জাতীয় পার্টির নেতাদের সাথে একবার বৈঠক করেন।
সাবেক কুটনীতিক এ কে এম আতিকুর রহমান মনে করেন একজন রাষ্ট্রদূতের এমন আচরণ কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভুত।
[নির্বাচনের আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ছোটাছুটি কীসের আলামত?]
বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতিতে পরিষ্কার হয়েছে যে দেশটি বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। কিন্তু পিটার হাসের এমন দৌড়াদৌড়িতে অন্য কথা বলে। কোন নির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়েই তিনি বারবার দলগুলোর সাথে বসছেন এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারকে সংবিধান পরিপন্থী হয়ে নির্বাচন আয়োজনের জন্য চাপ দিচ্ছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
পিটার হাসের সাথে মিটিং পর প্রতিবারই মির্জা ফখরুল ও আমির খসরূদের মতো বিএনপি নেতারা চাঙ্গা হয়ে যান এবনফ সাংবাদকদের সামনে এসে নানান ধরনের হুমকি দিতে থাকেন। কী আলোচনা হয় তাদের মধ্যে? কীসের আশ্বাস দেন পিট্র হাস যার দরুণ বিএনপি নেতারা আন্দোলনে বার বার ব্য়র্থ হওয়ার পরেও রাজনীতির মাঠে উজ্জীবিত থাকেন?
এক এগারোর সময়ও পশ্চিমা কূটনীতিকদের এমন তৎপরতা আমরা দেখেছি। তারা বৈঠকের পর বৈঠক করতেন, একেক দলকে একেক রকমের কথা বলতেন এবং বিরোধ উস্কে দিয়ে নিজেদের হস্তক্ষেপের পথ সুগম করতেন।
দেশে চলমান সংকটের সুযোগ নিয়ে পশ্চিমা কূটনীতিকেরা নিজের উদ্দেশ্য হাসিল করার স্বার্থে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তাদের তৎপরতার কারণে ২০০৭ সালে অনির্বাচিত সরকার ৯০ দিনের জায়গায় ২ বছর দেশ শাসন করে। সুশীল সমাজকে রাষ্ট্রক্ষমতার স্বপ্ন দেখিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিলো পশ্চিমা দেশগুলো। আর সেই স্বপ্নে বিভোর হয়ে রাজনৈতিক দল গঠন করে ১০ বছরের জন্য ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল ড. মুহম্মদ ইউনুস।
[নির্বাচনের আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ছোটাছুটি কীসের আলামত?]
২০২৩ সালেও ড. মুহাম্মদ ইউনুস যখন কর ফাঁকির দায়ে অভিযুক্ত এবং দেশের মানুষের কাছে নিজের ইমেজ হারাতে বসেছেন, তখনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের রাষ্ট্রদূতেরা সরকারকে নানাভাবে চাপ দেওয়া শুরু করেছে। ভুলে ভরা গুমের তালিকা নিয়েও সরকারকে নানাভাবে চাপ দিয়েছিল দেশগুল। এধরনের সংকট তৈরি করে নিজেদের পথ সুগম করতেই ব্যস্ত বাংলাদেশে নিযুক্ত পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকেরা।
আরেকটি এক এগারো ঘটানোই যেন তাদের লক্ষ্য।
আরও পড়ুনঃ
- আমেরিকার দখলদারিত্ব বাস্তবায়নে কাজ করছে বিএনপি ও তারেক জিয়া, মাঠে সহিংসতা ছড়াতে নামবে জামায়াত
- আমেরিকা জামায়াতকে দিয়ে বাংলাদেশকে সিরিয়া-ইরাক-আফগানিস্তানের মতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত করতে চায়
- যুক্তরাষ্ট্রের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে কঠোর অবস্থানে শেখ হাসিনা