বিস্ফোরণ

মাত্র চার দিনের ব্যবধান। এর মধ্যেই ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে সীতাকুণ্ড, সিদ্দিকবাজার আর সায়েন্সল্যাব। বিধ্বস্ত হলো ভবন, আছড়ে পড়ল ছাদ। একে একে তিনটি বিস্ফোরণের ঘটনায় সারাদেশেই দেখা দিয়েছে এক ধরনের আতঙ্ক। সন্দেহের দানা বাঁধছে জনমনে। প্রাথমিকভাবে গ্যাস বিস্ফোরণের কথা বললেও এসবের পেছনে ‘অন্য কিছুর’ আশঙ্কা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিছক দুর্ঘটনা বলতেও নারাজ নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। উড়িয়ে দিচ্ছেন না নাশকতার বিষয়টিও। এরই মধ্যে এসব ঘটনা তদন্তে কাজ করছে পুলিশ-র‌্যাবসহ সবকটি গোয়েন্দা সংস্থা।

এদিকে হুট করে গত ৮ মার্চ এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের সংস্থা আছে। কিন্তু সেগুলো ঠিকঠাক দায়িত্ব পালন করে না। যাদের নজরদারি করার কথা, তারা কাজ করে না, সব দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। আর তাদের এই ‘ব্যর্থতা’র কারণে এসব ঘটনা ঘটছে। আর ৭ মার্চ অপর এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সব বিস্ফোরণের ধরন প্রায় একই রকম হওয়ায় জনমনে সন্দেহ বাড়ছে।’

এসব ঘটনা নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মাথা ঘামানোকে ‘চোরের মন পুলিশ-পুলিশ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন সমালোচকরা।তারা বলছেন, ‘বিস্ফোরণ’ ঘটনা নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থা যে সন্দেহ প্রকাশ করেছে তারই প্রতিধ্বনি করেছেন মির্জা ফখরুল। তার বক্তব্যটি ‘রান্না ঘরে কে রে?মা আমি কলা খাইনা’ টাইপ। তদন্ত শুরু হতে না হতেই সন্দেহ থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতেই কি এমন মন্তব্য করলেন তিনি? হুট করে বিবৃতি দিয়ে কি প্রমাণ করতে চান ফখরুল?সমালোচকরা বলছেন ,দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে পদযাত্রা সহ তাদের ভাষায় ‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী’ পালন করছে বিএনপি। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়ে নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা একটি ‘আই ওয়াশ মাত্র’। অপ্রীতিকর পরিস্থিতির দায় এড়াতেই তাদের এই কৌশল বলে মনে করছেন সমালোচকরা।

[সারাদেশে পরপর বিস্ফোরণ:পরিকল্পনা হয়েছিল লন্ডনে]

সূত্রমতে, গতবছর ১ ডিসেম্বর বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদকে তারেক রহমান একরকম গোপনেই লন্ডনে ডেকে পাঠান।গোপনে তার আকস্মিক এই লন্ডন সফরে দলের অভ্যন্তরেই বিস্ময় সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে জানা যায়, নির্বাচন প্রতিহতের ‘কৌশল পত্র’ নিয়ে তিনি ঢাকায় ফিরেন। জানা যায়, উক্ত কৌশল পত্রে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির আড়ালে নিজেদের সন্দেহমুক্ত রেখে কিভাবে দেশে অস্থিশীলতা সৃষ্টির মাধ্যমে নির্বাচন বানচাল করা যায় তার বিস্তারিত ছক রচনা করেছিলেন তারেক রহমান, যেখানে পদযাত্রা কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলন শুরু করলেও নির্বাচন ঘনিয়ে এলে কঠোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছিল।

আরও পড়ুনঃ  আবারও বিএনপি-জামায়াতের হত্যার রাজনীতি 

অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে কঠিন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই হয়তো বিএনপির পরিকল্পনায় এমন ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। পরিকল্পিতভাবে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সরকারের ব্যর্থতা প্রমাণের সুযোগটিই নিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। নির্বাচনের আগে জনগণের কাছে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে যত ধরনের অরাজকতা ও নৈরাজ্য চালানো যায়, তার সবই করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দলটি।

আরও পড়ুনঃ