বিরোধী

বাংলাদেশ দেউলিয়া হয়ে যাবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন দেশের বিরোধী জোটের নেতারা। কোভিডে লাখ লাখ মানুষ মানুষ মারা যাবে বলে বিরোধী জোটের প্রভাবশালী নেতা ড. কামাল হোসেনের জামাই ডেভিড বার্গম্যান যেমনটা ধারণা করেছিলেন, সেটির মতো আইএমএফ নিয়ে তাদের ধারণাও ভুল প্রমাণিত হলো। বাংলাদেশকে জন্য ৪.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল।

রেজা কিবরিয়াকে আইএমএফের সাথে তার অতীত কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রায়শই বড়াই করতে দেখা যেতো। তিনিও ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে সরকার আইএমএফ ঋণ পেতে ব্যর্থ হবে। তার পোস্টগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ অর্থনীতির আকারে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ: আইএমএফ রিপোর্ট

“আইএমএফের তহবিল পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই এই সরকারের.. আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি…” ব্যঙ্গাত্মক সুরেই বলেছিলেন কিবরিয়া। কিন্তু তার সাবেক সহকর্মীরা, তাকে নয়, হাসিনা সরকারকেই সমর্থন জানালো।

এমনকি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উপহাস করে রেজা কিবরিয়া বলেছিলেন, “আমি যা বুঝি এটি তার মামা বাড়ির আবদার না। তাই সরকার আইএমএফ ঋণ পেতে পারে বলে তার (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) মিথ্যাচার বন্ধ করা উচিত।”

এখন যেহেতু আইএমএফ ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে, আওয়ামী লীগের সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রেজার সেউ পুরনো বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছে। ফলে তিনি যেন এখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আরেকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি একদম নিশ্চিত হয়েই ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন: “সরকারকে আইএমএফ থেকে খালি হাতে ফিরতে হবে।”

এক রাজনৈতিক সমাবেশে ফখরুল বলেন, “সম্পূর্ণ নিশ্চিতভাবে আমরা আশ্বস্ত করতে পারি যে বৈশ্বির পরিস্থিতির বিপরীতে দেশকে উত্তরণ করতে সরকার যে ঋণের আবেদন করেছে, আইএমএফ সেটি প্রত্যাখ্যান করবে।”

এখন তিনি কি নিজের থুথু গিলে খাবেন – সেটি নিজেও জানেন না।

সরকার যখন আইএমএফের থেকে একটি আর্থিক প্যাকেজ নিশ্চিত করার দৌড়ঝাপে শুরু করলো, সেই খবরের পর বিরোধীদলের গণ্যমান্যরা যেন নেতিবাচক ভবিষ্যদ্বাণী দিয়ে জ্যোতিষী হয়ে উঠলেন।

আরো বাজে ব্যাপার হলো, মির্জা ফখরুল ও আমানুল্লাহ আমানসহ বিএনপির নেতারা গুজব ও মিথ্যা প্রচারণার শুরু করে দিলেন যে শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশেরও পতন হবে।

আরও পড়ুনঃ পত্রিকায় কলামের নামে মির্জা ফখরুলের মিথ্যাচার ও তথ্যসন্ত্রাসের চুলচেরা বিশ্লেষণ

আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটাতে মরিয়া বিরোধী দল দেশের জাতীয় স্বার্থবিরোধী কাজ করতেও দ্বিধা করেনি। তারা আইএমএফ ঋণের জন্য দেশের আবেদনকেও নাকোচ করে দিতে উঠেপড়ে লেগেছিল।

[ ব্যর্থ হলো বাংলাদেশের বিরোধী দলের দেউলিয়াত্বের খায়েশ, ভাটা পড়লো অপপ্রচারের ঢেউয়ে ]

সম্প্রতি একটি টকশোতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য তারানা হালিম মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে আওয়ামী লীগের পতনের জন্য খালেদা জিয়া কতটা মরিয়া হয়েছিলেন যে তিনি ওয়াশিংটন টাইমসে স্বাক্ষরিত এক নিবন্ধে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিতে সুপারিশ পর্যন্তও করেছিলেন।

তারানা হালিম বলেন, “নিষেধাজ্ঞা মানেই জনগণের অনাহার, এর মানে হলো দেশের ভবিষ্যৎ নষ্ট করা। তাহলে একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী কীভাবে ক্ষমতার বাইরে থাকার কারণে বিদেশি শক্তিকে তার নিজের দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বলতে পারেন।”

এমনকি দেশে কোভিড মহামারি আঘাত হানতে শুরু করলে বিএনপি সমর্থকরা একেক জন যেন কেয়ামতের পূর্বাভাসকারী হয়ে উঠেছিল। দেশে লাখ লাখ মানুষ মারা যাবে বলে গুজব ও বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা শুরু করেছিল তারা।

কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, কোভিড মোকাবেলা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। দেশের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশকে টিকা কর্মসূচীর আওতায় নিয়ে এসেছিল দেশটি।ফলে ব্লুমবার্গ এবং নিক্কেই এশিয়ার রিভিউসহ সেরা জার্নালগুলোতে সফল দশটি দেশের তালিকায় শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ।

পদ্মা সেতু, কোভিড মহামারি থেকে আইএমএফের ঋণ – সবক্ষেত্রেই বিরোধী দল শুধু মিথ্যাই প্রমাণিত হয়নি, পাশাপাশি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখার জন্য জনগণকে শাস্তি দেওয়ার মতো অপরাধমূলক মনোভাবেরও প্রকাশ ঘটিয়েছে তারা।

কিন্তু জনগণ সবই মনে রাখে, ভোটের মাঠে যখন সময় হবে বিরোধী দলগুলোকে সমুচিত জবাব দেবে।

 

আরও পড়ুনঃ