
বেশ কিছুদিন আগের কথা, এই দেশে এক যুবরাজ ছিল। আসলে সে ছিল অপরাধ ও দুর্নীতিতে একচ্ছত্র। জীবনে কোনোকিছুর অভাব ছিল না তার। তারপরও নিয়মিত সরকারি এবং বেসরকারি অর্থ চুরি ও আত্মস্যাৎ করার বাতিক ছিল, এটাই ছিল তার উন্মাদনা, মানসিক বিকারগ্রস্ততা। তার পিতা ছিলেন একজন সামরিক স্বৈরাচার এবং মা ছিলেন একজন প্রধানমন্ত্রী, যার বিরুদ্ধে অনেক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। পরিবারের ধারাবাহিকতায়, তাদের সন্তানও দেশকে অন্যায় এবং অবৈধ কারবারের মধ্যে ডুবিয়ে ফেলে।
এই ব্যক্তির নাম তারেক রহমান।
দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য সবরকমের অপচেষ্টাই করেছিল সে। জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা থেকে শুরু করে সংখ্যালঘু নিপীড়ন, এমনকি অবৈধ অস্ত্রব্যবসা.. কোনোকিছুই বাদ দেয়নি। তার মায়ের নেতৃত্বে, ২০০১ সালে যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে জোট করে বিএনপি যখন বাংলাদেশের সরকার গঠন করে, তখন ক্ষমতার উত্তাপে অন্ধ হয়ে যায় সে। পরের পাঁচটা বছর ছিল অনেক ঘটনাবহুল। এই সময়টায় অনেক ‘মহান’ ইতিহাস সৃষ্টি করে তারা। বিরোধীদলীয় নেত্রীর সমাবেশে গ্রেনেড নিক্ষেপ করে, দেশের ৬৪ জেলার একযোগে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়, অবৈধভাবে দশ ট্রাক অস্ত্র নিয়ে আসে, সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত করে দেশকে, সংখ্যালঘুদের ওপর দাঙ্গা চালায়। একটু বেশি বেশি হয়ে গেলো কী! মোটেও না, আসলে- এখনো তো অনেক কিছুই বলি নি!!
ওই পাঁচ বছরে, শুধু দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি তারেক রহমানের অপরাধ ও দুর্নীতি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তার বদনাম ছড়িয়ে পড়ে। বহুল আলোচিত উইকিলিকস এর ফাঁস হওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, তার সহিংস কৌশলের কারণে যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত ভীত হয়ে পড়েছিল। তাকে হুমকি হিসেবে অভিহিত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তারা তাকে ‘চৌর্য-উন্মাদনায় মত্ত ও বিকারগ্রস্ত এক সরকার’-এর প্রতীক বলে মনে করতো এবং ব্যক্তি হিসেবেও তাকে চরম দুর্নীতিবাজ বলে অভিহিত করতো। তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টির পর্যবেক্ষণ থেকে জানা যায়- সেসময় তারেক রহমান পুরো দেশকে ঘুষ, আত্মসাৎ এবং দুর্নীতির দুষ্টচক্রে পরিণত করেছিল। এই কূটনীতিক আরো সুপারিশ করেছিলেন যে, এসব কারণে তারেককে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি না-দেওয়া যেতে পারে। এদিকে, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর শীর্ষ কর্মকর্তা এবং মুম্বাইয়ের মাফিয়া দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে তারেকের গোপন বৈঠকের ঘটনায় তার জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতাও প্রকাশ্য হয়ে পড়ে।
পরবর্তীতে, রাজনীতির ছদ্মবেশে ঘটানো তার সব অপকর্ম বের হয়ে আসতে থাকে। সে বেশকিছু মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়।
২০০৪ সালে, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে, গ্রেনেড হামলা করে হত্যাচেষ্টার মাস্টারমাউন্ড হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছে সে। জেল থেকে বাঁচার জন্য, তারেক রহমান এখন বিদেশে নির্বাসিত জীবনযাপন করছে। কিন্তু থেমে নেই তার অপতৎপরতা। অনলাইনে প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। বিদেশে বসেও দেশকে অস্থিতিশীল করতে নিয়মিত ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে সে।
তার মিথ্যাচার ও অপকর্ম কখনো থামবে কিনা, তা হয়তো শুধু স্রষ্টাই জানে! আর কেউ জানে না!