
বিএনপি-জামায়াত (২০০১-২০০৬) জোট সরকারের সময় বিএনপির মন্ত্রী-এমপিরা সরাসরি ঘুষ নিয়ে বড় বড় মামলার আসামিদের রক্ষা করতো। এভাবেই ‘ঘুষ বাণিজ্যের’ মাধ্যমে আইনের শাসনকে ভূলুন্ঠিত করতো তারা। তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর নিজে এরকম একটি খুনের মামলা থেকে আসামিকে বাঁচাতে ৯টি চেক ও পে অর্ডারের মাধ্যমে ২০ কোটি টাকা ঘুষ নেয়।
আরও পড়ুন: বিএনপির নির্বাচনে ‘না’ তবুও আগামী নির্বাচনকে ঘিরে তারেকের মনোনয়ন বাণিজ্য শুরু
২০০৭ সালের ১ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় প্রথম আলোর প্রতিবেদনে ‘হুমায়ন কবির সাব্বির’ হত্যা মামলার ঘটনায় এসব তথ্য উঠে আসে। সেখানে বসুন্ধরা গ্রুপের একজন পরিচালক, যার মাধ্যমে টাকা লেনদেন হয়েছে, তার স্বীকারোক্তিতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়কার যৌথ-বাহিনী এসব তথ্য উদযাটন করে।
ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বসুন্ধরা গ্রুপের টেলিযোগাযোগ শাখার পরিচালক হুমায়ন কবির সাব্বিরকে হত্যামামলার ঘটনায় বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকের ছেলে সাফিয়াত সোবহান সানবি প্রধান আসামি। কিন্তু ছেলেকে খুনের দায় থেকে বাঁচাতে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের সঙ্গে ২০ কোটি টাকার চুক্তি করেন বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক আহমেদ আকবর সোবহান। এরপর গ্রুপের অন্য একজন পরিচালককে দিয়ে ক্যাশ এক কোটি টাকা পাঠান প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের বাসায়। এসময় টাকাটা বিএনপির সাবেক সাংসদ ও ব্যবসায়ী কাজী সলিমুল হকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেন বাবর।
যৌথ বাহিনীর কাছে সলিমুল হক এই অর্থ নেওয়ার কথা স্বীকার করেন এবং পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাপে সেই অর্থ সরকারের কোষাকারে জমা দিতে বাধ্য হন তিনি। এছাড়াও ৯টি চেক ও পে অর্ডারের মাধ্যমে ২০ কোটি টাকা ঘুষ হিসেবে নিয়েছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, তারেক রহমানের সঙ্গে পরামর্শ করে মোটা অর্থের বিনিময়ে এই মামলা থেকে বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকের ছেলেকে অব্যাহতি দেওয়ার উদ্যোগ নেন বাবর।
আরও পড়ুন: মূল্যায়ন ও পদ বিতরণের নামে তারেক রহমান নতুন করে চাঁদাবাজির জাল বিছানোর পরিকল্পনা করছেন
উল্লেখ্য যে, বাবরকে দিয়ে হস্তক্ষেপ করানোর মাধ্যমে দেশের আইনশঙ্খলা বাহিনীর ওপর প্রভাব বিস্তার করতেন তারেক রহমান। তারেকের অনুসারীরা পুরো শাসনামলজুড়ে সারা দেশে হত্যা, চাঁদাবাজি, লুটপাট ও ধর্ষণের মহোৎসবে মেতে ওঠে।
[২০০১-২০০৬ দুঃশাসন: ঘুষের বিনিময় অপরাধীদের বাঁচানোর ‘কন্ট্রাক্ট’ নিতো বিএনপির মন্ত্রীরা]
পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাব্বির হত্যা, ওয়ারিদ টেলিকমের সঙ্গে লেনদেন, পুলিশের পোশাক কেনা, অস্ত্র কেনার দূর্নীতি, পুলিশের বেতারযন্ত্র কেনার দুর্নীতি, র্যাব-পুলিশের জন্য গাড়ি কেনা ও ওয়ার্ল্ড-টেলের সঙ্গে অবৈধ লেনদেনে জড়িয়ে পড়ার কথা স্বীকার করেছে। বাবর আরো জানায়, খালেদা জিয়ার অনুমতি নিয়ে ও তারেক রহমানের নির্দেশে মামলাটি শেষ করার জন্য ১০০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল নির্বাচনের খরচ হিসেবে। পরে ৫০ কোটি টাকায় রফা হয়, ও আগাম হিসেবে ২০ কোটি টাকা নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:
- দুর্নীতিতে টানা পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বিএনপির জাতির সাথে তামাশা
- টানা পাঁচবার আমাদের এই স্বাধীন দেশ ছিল দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন, এই চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছিল দেশের জন্য চরম লজ্জার
- দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা যখন দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে তখন মানুষের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়