
দিন নাই, রাত নাই, গণমাধ্যম খুললেই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গলাবাজি শোনা যায়। সরকারের সমালোচনায় স্বপ্নেপ্রাপ্ত এবং লন্ডন থেকে আগত স্ক্রিপ্ট পাঠ করেন। সেই মির্জা ফখরুলের ইতিহাস ভুলে যাননি প্রবীণ ব্যক্তিরা। একাত্তরের ঘাতক রাজাকার রুহুল আমিন চখার পুত্র ছাড়াও ফখরুলের আরেকটি পরিচয় আছে। আজ তা উন্মোচিত করা হবে।
১৯৮১ সালের ৩০শে মে স্বৈরাচার জিয়া নিহত হওয়ার পরবর্তী ৪০ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হয়। প্রতিদিন টিভি-রেডিওতে প্রচারিত ‘শ্বেতপত্র’ ছাড়াও বিটিভি, রেডিও বাংলাদেশ এবং জিয়ার তথাকথিত ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র’ আমলে প্রকাশের অনুমতি থাকা মাত্র গুটিকয়েক পত্রিকায় মাসের পর মাস চালানো হয় সহানুভূতির প্রচারণা বা ক্যাম্পেইন।
সেই প্রচারণার শক্তিতে বলীয়ান হয়ে ৬ মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি (জিয়ার উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্বরত) ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বিচারপতি সাত্তার রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার মাত্র ৩ মাস পর, অর্থাৎ স্বৈরাচার জিয়া নিহত হওয়ার ৯ মাসের মধ্যে ১৯৮২ সালের ২৪শে মার্চ সকালে খবর এলো- ‘খবর আছে’। কী সেই খবর? সেদিন বিকেলে দেশবাসী অবাক বিস্ময়ে নয়া রাষ্ট্রপতির লিখিত ভাষণ পাঠ করা শুনলো।
[ইতিহাসঃ জিয়ার মৃত্যুর পর বিএনপিকে দুর্নীতিবাজ বলে সাব্যস্ত করেছিলেন মির্জা ফখরুল]
সেই ভাষণে বিএনপি সরকারকে চরম অদক্ষ, দুর্নীতিগ্রস্ত, জুলুমবাজ… ইত্যাদি বিভিন্ন বিশেষণে আখ্যা দিয়ে দেশ উদ্ধারে সেনাবাহিনীকে দেশের দায়িত্ব নিতে আবেদন জানানো হয়। এমন আহ্বানের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ হয়নি। এমনকি বিএনপি সরকারের নেতা-কর্মীরাও ছিল নীরব। তাই ‘শান্তিপূর্ণ’ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর হলো। শুরু হলো স্বৈরাচার এরশাদের সামরিক শাসন। স্বৈরাচার জিয়া সরকারের মন্ত্রীরা পালানো শুরু করলেন, কেউ আগে কেউ পরে গ্রেপ্তার হলেন। অনেকে স্বৈরাচার এরশাদের দলে যোগ দিয়ে রক্ষা পেলেন।
এখন অনেকেই প্রশ্ন করবেন, আজকের দিনে সেদিনের ঘটনার সম্পর্ক কী? মির্জা ফখরুল এখানে কীভাবে সম্পর্কিত?
সম্পর্ক আছে। বলুন তো, রাষ্ট্রপতির ভাষণের লিখিত রূপ প্রস্তুত করেন কে? করেন তার সহকারী। বিচারপতি সাত্তারের সহকারীরা কে ছিলেন জানেন? আজকের বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল। বিএনপি তথা স্বৈরাচার জিয়া সরকারের যাবতীয় ত্রুটি-বিচ্যুতি তুলে ধরে দুর্নীতিবাজ ও জুলুমবাজ হিসেবে সাব্যস্ত করা ভাষণটি প্রস্তুত করেছিলেন তিনি।
[ইতিহাসঃ জিয়ার মৃত্যুর পর বিএনপিকে দুর্নীতিবাজ বলে সাব্যস্ত করেছিলেন মির্জা ফখরুল]
স্বৈরাচার জিয়া নিহত হওয়ার মাত্র ৯ মাস পরের ঘটনা ছিল এটি। আর আজ তিনি জিয়াকে নিয়ে নানারকম আষাঢ়ে গল্প তৈরি করেন। বিএনপির প্রবীণ নেতারা কি আর সাধে দলত্যাগ করেন?
আরও পড়ুনঃ
এটাই কি বিএনপির “Take Back Bangladesh”!
১৭ আগস্ট ২০০৫ : বিএনপি জামাত জোট সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে সারাদেশে জেএমবি’র সিরিজ বোমা হামলা
দেশ যখন একেবারে শান্ত এবং স্থিতিশীল, তখনই নতুন পরিকল্পনা শুরু করেছে বিএনপি