প্রধানমন্ত্রী

দক্ষ হাতে করোনা সামাল দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। সারাবিশ্বের অর্থনীতি এবং মানুষের জীবন-জীবিকা যেভাবে থমকে গিয়েছিল, কোথাও মুখ থুবড়ে পড়েছিল, সেসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী এবং যুগান্তকারী ফর্মূলাই টিকিয়ে রেখেছিল বাংলাদেশকে। ভেঙে পড়তে দেয়নি কঠিন দুর্যোগেও। একইসাথে সামাজিক বিধি-নিষেধ প্রতিপালন এবং মানুষের আয়-রোজগার সচল রাখার সূক্ষ্ম কৌশলটাই বাংলাদেশকে করোনাকালে লড়াইতে টিকিয়ে রেখেছি সমালোচকদের মুখে ঝামা ঘষে।

শেখ হাসিনা টানা এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের হাল ধরে রেখেছেন দক্ষ হাতে। নানাবিধ বৈশ্বিক সংকট এবং দুর্যোগ মোকাবেলা করেছেন তাঁর প্রজ্ঞা এবং দূরদর্শী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে। বিবদমান বিভিন্ন পক্ষের সাথেও কূটনৈতিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে পৌঁছে দিয়েছেন এক সুসংহত অবস্থানে। আজ সারাবিশ্বে বাংলাদেশ এক রোলমডেল, অনেকের কাছে অর্থনৈতিক বিস্ময়ও বটে!

আরও পড়ুনঃ

সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে সারাবিশ্বে তীব্র জ্বালানি সংকট তৈরি হয়। যদিও এর আগে থেকেই চলছিল ডিজেল সংকট। যার ধাক্কা লেগেছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থার ওপরেও। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকটের মধ্যে দেশকে সংকটমুক্ত রাখতে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে নানা নির্দেশনা ইতোমধ্যে পালন শুরু হয়েছে।

[প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী এবং যুগান্তকারী যে সিদ্ধান্তগুলো বৈশ্বিক এই ক্রাইসিস মোমেন্টে পথ দেখাচ্ছে]

সর্বশেষ সোমবার (২৫শে জুলাই) মন্ত্রিপরিষদের সবাইকে খরচ কমানোর নির্দেশনা দেন তিনি। এমনকি গাড়ির তেল খরচ করে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের ছোটাছুটি না করে ভার্চুয়ালি যোগাযোগ বাড়ানোরও নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আবারও নতুন কিছু নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন। তিনি কম গুরুত্বপূর্ণ জিনিস এখনই না কেনার নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি সরকারি টাকায় বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ রাখারও নির্দেশনা দেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশনা দেন।

এর আগে শনিবার (২৩শে জুলাই) জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উদযাপন এবং বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক-২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই সরকার জ্বালানি সাশ্রয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এতে বিরোধীদল সমালোচনা করলেও হতাশ হওয়া যাবে না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমেরিকা রাশিয়ার ওপর ডলার আদান-প্রদানে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এতে শুধু বাংলাদেশ নয়, ইউরোপ ও আমেরিকার অনেক উন্নত দেশও ভুক্তভোগী বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, এই একটা সিদ্ধান্তের কারণে আমাদের সার কেনা, খাদ্য কেনা অথবা জ্বালানি তেল কেনা, সবক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শুধু আমরা না, সারাবিশ্বই একটা দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে পড়ে গেছে; এটা হলো বাস্তবতা।

[প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী এবং যুগান্তকারী যে সিদ্ধান্তগুলো বৈশ্বিক এই ক্রাইসিস মোমেন্টে পথ দেখাচ্ছে]

গত ১৮ই জুলাই চলমান জ্বালানি সংকট পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আরেক বৈঠকে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) এবং জ্বালানি তেল আমদানি কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর পাশাপাশি ডিজেলচালিত সব বিদ্যুৎকেন্দ্রও আপাতত বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়। বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণে সারাদেশে দিনে ১ ঘণ্টা করে বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং করবে বিদ্যুৎ বিভাগ, যা গত ১৯শে জুলাই থেকে সারা দেশে কার্যকর হয়েছে।

একইসঙ্গে শপিং মল, দোকানপাট রাত ৮টার মধ্যে বন্ধেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। সারাদেশে সব ধরনের আলোকসজ্জা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দেশকে আরও গভীর সংকটে যেন না পড়তে হয় সে কারণে প্রধানমন্ত্রী ত্বরিৎ নেওয়া সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সর্বস্তরের জনগণ।

[প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী এবং যুগান্তকারী যে সিদ্ধান্তগুলো বৈশ্বিক এই ক্রাইসিস মোমেন্টে পথ দেখাচ্ছে]

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বখ্যাত সাময়িকী নিউজউইকের সর্বশেষ সংস্করণে বাংলাদেশের অভাবনীয় অর্থনৈতিক ও দারিদ্র্য দূরীকরণের সাফল্য নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনীতির প্রধান খাতগুলোতে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রাজ্ঞ ও শক্তিশালী নেতৃত্ব দিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন।

আরও পড়ুনঃ