ক্ষমতা

ক্যালেন্ডারের পাতার বিভিন্ন দিন-তারিখ নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ দেশের মানুষের কাছে । কোনো তারিখ আনন্দের। আবার কোনো তারিখ বেদনার, উদ্বেগের। ‘৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির জীবনে তেমনি একটি বেদনার দিন, কষ্টের দিন। এই দিনটি বাঙালি জাতিকে শুধু বিষাদময় করেনি, বিশ্বসভায় করেছিল কলঙ্কিতও। স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে খুনি জিয়া।

জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেয়। এরপরই শুরু হয় বিদ্রোহ। ক্ষমতা ধরে রাখতে সেনাবাহিনীর হাজার হাজার সৈনিক, অফিসারদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করে খুনি জিয়া। তার সেই ঘোষণার পর সেনাবাহিনীতে ১৮ বার ক্যু হয়। দেশের প্রথম সামরিক আইন প্রশাসক থেকে এক অধ্যাদেশ জারি করে নিজেই রাষ্ট্রপতির আসনে বসেন।

আরও পড়ুন : ইতিহাসের কাঠগড়ায় স্বৈরশাসক জিয়ার গুম ও হত্যার রাজনীতির উপাখ্যান

শুরু হয় আবারও পাকিস্তানি কায়দায় দেশ শাসন। বঙ্গবন্ধু হত্যার মাত্র ৪ মাস পর ‘৭৫-এর ৩১শে ডিসেম্বর ‘৭২-এর ঘাতক দালাল আইন বাতিল করে ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধীর মুক্তি দেয় জিয়া। যাদের মধ্যে ৭৫২ জনই ছিলেন দণ্ডপ্রাপ্ত। অবৈধ ঘোষিত ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অনুমতি দেয়। ক্ষমতায় টিকে থাকতে ১৯৭৭-এ করে অগণতান্ত্রিক উপায়ে হ্যাঁ না ভোটের আয়োজন।

অধ্যাদেশের মাধ্যমে রাজাকার, ঘাতক দালালদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেবার আদেশ দেন। সংবিধানের ৫ম সংশোধনীকে আইনে প্রণীত করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের দ্বাররুদ্ধ করতে বিষাক্ত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে প্রণীত করেন। মৌলবাদ এবং জামাতের স্বাধীনতাবিরোধী সকল কার্যকলাপকে সাংবিধানিক বৈধতা দেয়। সর্বোপরি ক্ষমতা ধরে রাখতে ১৯৭২ এর সংবিধানকে কেটে ছিঁড়ে নিজের ইচ্ছে মত সব কিছু জায়েজ করার নগ্ন প্রচেষ্টা চালায় জিয়া।

আরও পড়ুন : মুখোশধারী জিয়ার স্বরূপ, এজেন্ডা ও গোপন মিশন: ফ্যাক্টস বিশ্লেষণ

[ক্ষমতা ধরে রাখতে সেনাবাহিনীর হাজার হাজার সৈনিক, অফিসারদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করে খুনি জিয়া]

খালেদা_জিয়া
খালেদা জিয়া

‘একই পথে’ হেঁটেছেন খালেদা জিয়া:
ইতিহাস বিশ্লেষকরা বলেন, সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান যা করেছিলেন খালেদা জিয়াও পরে ‘একই পথে’ হেঁটেছেন। যুদ্ধাপরাধী, রাজাকারদের সাথে নিয়ে ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতার গদিতে বসে জিয়ার স্ত্রী খালেদাও অসহায় মানুষের রক্তে রঞ্জিত করে নিজের হাত। বিদ্যুৎ দাবি করায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে ১৯ জন মানুষকে হত্যা করেছিল। সারের দাবিতে আন্দোলন করেছিল বলে ১৮ জন কৃষককে হত্যা করেছিল। ক্ষমতায় টিকে থাকতে হত্যা করাটাই যেন ছিল তাদের কাজ। আর তাদের দুর্নীতি, অর্থ-পাচার নিয়ে কথা বলার যো ছিল না দেশবাসীর।

তারেক রহমান
তারেক রহমান

জিয়াউর রহমান যেমন শত শত মুক্তিযোদ্ধা, সামরিক অফিসারকে হত্যা করেছে, জওয়ানদের হত্যা করেছে, সৈনিকদের হত্যা করেছে, তার স্ত্রীও একই পথ অবলম্বন করেছেন। আর তাদের সন্তান তারেক রহমানও বাদ যাননি। জঙ্গি আর সন্ত্রাসীদের গডফাদার ছিল তারেক। দুর্নীতি আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে আমেরিকার এফবিআই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকায় রয়েছে খালেদা পুত্র তারেকের নাম। এখন সাজার বেরি পায়ে পড়ে লন্ডনে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

আরও পড়ুন : জিয়া পরিবার ও বিএনপির দুর্নীতি

সুভাষ সিংহ রায়
সুভাষ সিংহ রায়

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিক সুভাস সিংহ রায় বলেন, পাপ বাপকেউ ছাড়ে না। যার প্রমাণ বিএনপির রাজনীতির দিকে তাকালেই দেখা যায়। জিয়ার পাপের কারণেই আজ বিএনপির এই অবস্থা। ক্ষমতায় থেকেও জিয়ার মৃত্যুর বিচার করেনি খালেদা। আজ বিএনপির হাল ধরার মতো কেউ নেই। একমাত্র উত্তরাধিকার পালিয়ে বেড়াচ্ছে। খালেদা জিয়া সরকারের অনুকম্পায় বাসায় থাকার সুযোগ পেয়েছে। কিছুদিন পর পর দল বেধে নেতারা পদত্যাগ করছে। দলের মধ্যে নেতায় নেতায় দ্বন্দ্ব। আসন্ন নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবার মতো নেতা নেই এখন বিএনপিতে। এক কথায় বলতে গেলে জিয়া ও খালেদার অপকর্মের পরিণতি ভোগ করছে দলটি।

আরও পড়ুন :