
বিএনপি জন্মলগ্ন থেকেই ঐতিহাসিকভাবে চীন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রক্ষা করে আসছিল। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও ছিল মধুর সম্পর্ক। দলীয় রাজনৈতিক টানাপোড়েনে এখন যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে ধীরে ধীরে সবই হারিয়েছে দলটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশের ক্ষমতার রাজনীতিতে যারা কলকাঠি নাড়ায় তারা তারেকের নেতৃত্বে বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এদিকে কানাডার আদালতও বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে অবহিত করেছে। ‘তারেককে সন্ত্রাসী আখ্যায়িত’ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বহু আগেই সে-দেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।
এছাড়া পাকিস্তান ও কাশ্মীরের কিছু আন্তর্জাতিক দুনিয়া স্বীকৃত সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বিদ্যমান ছিল। তারাই ২১ আগস্টের জন্য পাকিস্তানে তৈরি আর্জেস গ্রেনেড সরবরাহ করেছিল বলে প্রমাণিত হয়েছে।
সবমিলিয়ে তারেক রহমানের কারণেই বিএনপি এখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মিত্রহীন একটি দলে পরিণত হয়েছে।
[বিএনপি এখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মিত্রহীন একটি দলে পরিণত হয়েছে]
দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি), জেএমবি, জামায়াতে ইসলামিসহ বহু ক্ষুদ্র-বৃহৎ সংগঠনের সঙ্গেও তারেক রহমান এবং বিএনপির যোগাযোগ ছিল। ছাত্রশিবির এবং ছাত্রদলকে এক মায়ের সন্তান বলে অবহিত করে তারেক রহমান আন্তর্জাতিকভাবে বিএনপির অবস্থানকে চূড়ান্ত বিপর্যয়ে পর্যবসিত করেন।
বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, তারেকের বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদেরও প্রশ্ন থাকায় জ্যেষ্ঠ নেতাদের বেশির ভাগই তারেককে পছন্দ করেন না। তারা মনে করেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিএনপি সম্পর্কে বিরূপ ধারণা তৈরি হয়েছে একমাত্র তারেক রহমানের কারণেই। তাই বিদেশি মিত্রদের উপর ভর করেও বিএনপি রাজনৈতিকভাবে এগোতে পারছে না।
আরও পড়ুনঃ
- তারেক জিয়ার সন্ত্রাসের কাছে বিএনপি নেতারা জিম্মি
- আইএসের সাথে তারেকের যোগাযোগের তথ্য ফাঁস করলো বিএনপি নেতা
- আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা এখন তলানিতে
এদিকে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলা এবং অসুস্থতার কারণে দায়িত্বে থাকা তারেক রহমানের বিতর্কিত নানা সিদ্ধান্তে দলের মধ্যেই সৃষ্টি হয়েছে কোন্দল। ফলে নেতা তৈরি হচ্ছে না দলটিতে। যার প্রভাবে বিদেশি সম্পর্ক তৈরি ও রক্ষায় অভাব দেখা দিয়েছে যোগ্য নেতৃত্বের।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, চীনের সাথে নতুন করে সম্পর্ক তৈরির জন্য যোগ্য নেতা খুঁজে পাচ্ছে না দলটি। তরিকুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, সাদেক হোসেন খোকা প্রমুখ সাবেক নেতারা আগে চীনসহ বিদেশি যোগাযোগ সফলতার সঙ্গে রক্ষা করতেন। তাদের মৃত্যুর পর নতুন বিএনপি নেতারা চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক করার ক্ষেত্রে তেমন সফলতা দেখাতে পারেননি।
[বিএনপি এখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মিত্রহীন একটি দলে পরিণত হয়েছে]
সূত্রটি আরও জানায়, সম্প্রতি পাকিস্তানের কাছে রাজনৈতিক সহযোগিতা চেয়েছিল বিএনপি। সেখানেও ব্যর্থ হয়েছে দলটি। পাকিস্তান-বিএনপি ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি সকলেরই জানা। এমনকি পাকিস্তানের আদালতে আইএসআই এর সাবেক প্রধান জানিয়েছিল, পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশের নির্বাচনে বিএনপিকে অর্থ সহায়তা দিয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান নিজেই টালমাটাল অবস্থায় আছে। আর দেশটি নিজেই একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। কাজেই বিএনপিকে সাহায্য-সহযোগিতা করার মতো অবস্থান তাদের নেই।
উল্লেখ করা প্রয়োজন, বিএনপি ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে দেশে আন্দোলনের চেয়ে বিদেশি বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার কৌশল গ্রহণ করেছিল। সেই কৌশলের অংশ হিসেবে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে দলটির একটি প্রতিনিধি দল ভারতে গিয়ে সে-দেশের থিঙ্ক ট্যাংকদের সাথে বৈঠক করেছিল। বৈঠকে ছিলেন আমির খসরু চৌধুরী এবং আবদুল আউয়াল মিন্টুর মত প্রভাবশালী নেতারা। সেখানেও বিএনপি আশানুরূপ ফলাফল অর্জন করতে পারেনি।
আরও পড়ুনঃ
- স্বৈরশাসকদের ষড়যন্ত্রের কারণে দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল নাই
- দুর্নীতিতে টানা পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বিএনপির জাতির সাথে তামাশা
- ছোট দলগুলোর জন্য বিএনপির নতুন টোপ ‘জাতীয় সরকার’