
অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া দেশে রূপান্তরিত হয়েছে শ্রীলঙ্কা। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, দিনের সিংহভাগ সময় লোডশেডিং, বড় অঙ্কের বৈদেশিক ঋণের ফলে জনবিক্ষোভ দানা বেঁধেছে দেশটিতে। দেশটির পরিস্থিতি এতটাই শোচনীয় যে, উচ্চ বেকারত্ব এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব জিনিসের ঘাটতি দেখা দেয়ায় অনেক শ্রীলঙ্কান বিদেশে উন্নত জীবনের আশায় নিজ দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন।
শ্রীলঙ্কার এই অবস্থার পর তথাকথিত সুশীল সমাজ ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তথা বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি দেশটির সাথে বাংলাদেশকে মিলাতে চাইছে। তাদের দাবি, শ্রীলঙ্কা থেকে বাংলাদেশকে শিক্ষা নিতে হবে, শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি বাংলাদেশেও হতে পারে।কিন্তু তৎকালীন বিএনপি সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ বাজেটের সাথে প্রকল্পের মিল না থাকা, লুটপাটের মহরায় রাষ্ট্রীয় কোষাগার শূন্য করে ফেলাসহ নানা কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি হয়ে পড়েছিল ধ্বংসপ্রায়। সে সময় বাংলাদেশের অবস্থা ছিল হেনরি কিসিঞ্জারের তলাবিহীন ঝুড়ি।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ওই পাঁচ বছরে বিএনপি বাংলাদেশকে ৫০ বছর পিছিয়ে দেয়। ওই পাঁচ বছরে বিএনপি হত্যা, নির্যাতন, দখল, দলীয়করণ, দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি, ব্যাপক লুটপাট, দুর্নীতি ও অর্থপাচারে দেশের অর্থনীতিকে করে তোলে পঙ্গু। কিন্তু তখনকার সেই দুর্দিনের কথা সুশীল সমাজের মুখে উচ্চারিত হচ্ছে না। উল্টো বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনার সরকার যখন দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করে একটি আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করেছে, ঠিক তখনই সুশীল সমাজের এক শ্রেণীর নামধারী জ্ঞানপাপী শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশকে মিলাতে চাইছে। যা বর্তমান বাস্তবতায় কখনোই সম্ভব না।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশ বাংলাদেশই থাকবে; কখনোই শ্রীলঙ্কা হবে না
এ ব্যাপারে অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ও সমালোচক অধ্যাপক এ আরাফাত বলেন, সরকার আমদানি নির্ভরতার পাশাপাশি যে হারে রপ্তানিমুখী বাণিজ্যে গুরুত্বারোপ করেছে তাতে করে দেশের অর্থনীতি দিনকে দিন আরো চাঙ্গা হচ্ছে। একসময় বাংলাদেশ বৈদেশিক ঋণের পেছনে ছুটলেও এখন বাংলাদেশই অন্যদেশগুলোকে ঋণ দিয়ে থাকে। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার দেশকে লুটপাটের স্বর্গরাজ্য করে রেখেছিল। দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশকে উন্নয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিল তারা। এ দলটির এসব আচরণ আগেও ছিলো, এখন তো আরও বেড়েছে। অথচ বিএনপির উচিত সরকারের উন্নয়নযজ্ঞে পাশে থেকে দেশকে আরও এগিয়ে নেয়া।
অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি তৈরির যে দিবাস্বপ্ন দেখছে তা কখনোই বাস্তব হবে না। না হওয়ার পেছনে অর্থনীতিবিদরা পাঁচটি কারণ উল্লেখ করেছেন।
সেগুলো হলো- ১. বাংলাদেশের জনসম্পৃক্ত মেগা প্রকল্প, ২. রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্প, ৩. প্রবাসী বাঙালিদের রেমিটেন্স, ৪. ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্পের কর্মক্ষমতা, ৫. খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতাসহ নানা উন্নয়নমুখী খাত।
সরকারের নানামুখী এসব উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত হয়ে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত তৎকালীন বিএনপি সরকার নতুন করে দেশবিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। দেশের উন্নয়ন তাদের সহ্য হচ্ছে না। দেশকে আবারও দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করতে চায় তারা। দেশকে লুটপাট করে বিদেশের কাছে ইজারা দিতে মরিয়া তারা।