বাজার

ইউক্রেন-রাশিয়ার দ্বন্দ্বে অস্থির হয়ে ওঠা আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব পড়েছিল বাংলাদেশর বাজারেও। যার ফলে ভোজ্যতেল আমদানি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। এর ফলে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী পূর্বে আমাদানিকৃত ভোজ্যতেল মজুদ করে বাজার অস্থিতিশীল করে তোলে। যার ফলে ভোক্তা পর্যায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে দামও বাড়তে থাকে নিত্য প্রয়োজনীয় এই পণ্যের। কয়েকদিনের ব্যবধানে ভোজ্যতেলের বাজারে যেন আগুন লাগে।

এই অস্থিরতার পালে বাতাস দিতে থাকেন খোদ বিএনপি নেতারা। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে তারা এ নিয়ে সরকারের সমালোচনা শুরু করেন। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে সরকারের প্রতি বিষোদ্গারকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানান তারা। সামাজিক যোাগাযোগ মাধ্যম, রাজনীতির মাঠ- সর্বত্র এই ইস্যুকে পুঁজি করে জলঘোলা করতে থাকেন তারা। তবে এরই মধ্যে জানা যায়, এই মানবসৃষ্ট সংকটের পেছনে দায়ী বিএনপির ব্যবসায়ী নেতারা।

আরও পড়ুনঃ ১৯৯১ সালে বিএনপির তৈরি করা প্রথম তেলের সিন্ডিকেটটি এবারো চক্রান্ত করে দাম বাড়ানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, গোয়েন্দা সংস্থাসহ টাস্কফোর্সের সদস্যরা অনুসন্ধানে নামলে এর সত্যতা মেলে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি নেতাদের গুদামে ভোজ্যতেলের অবৈধ মজুদ ধরা পড়তে থাকে। ক’দিন আগে খুলনায় এক বিএনপি নেতার গুদামে বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেলের সন্ধান মেলে। গুদাম সিলগালা এবং জরিমানা করা হয়।

[বাজার অস্থিতিশীল করতে গুদামে ২০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল মজুদ, বিএনপি নেতাকে জরিমানা]

আজ সন্ধান মিলেছে নওগাঁতে। জেলার নিয়ামতপুরে ২০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল অবৈধভাবে মজুদ রাখার অপরাধে এক বিএনপি নেতার গুদাম সিলগালা করার পাশঅপাশি তাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

শনিবার (১৯শে মার্চ) সন্ধ্যায় নিয়ামতপুর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন বাজারের পাশে চাতালের গুদামঘরে উপজেলা প্রশাসন ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা- এনএসআই যৌথ অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এ জরিমানা করা হয়। এ সময় উপজেলা প্রশাসন, এনএসআই ও পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযুক্ত হুমায়ুন কবির (৩৮) উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন বাজারের বড় ব্যবসায়ী এবং উপজেলা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির প্রভাবশালী নেতা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউনও) আবদুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা- এনএসআই’র গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন বাজারের পাশে চাতালের গুদাম-ঘরে হুমায়ুন কবির এর মালিকানাধীন মেসার্স হাবিবা স্টোরে অভিযান চালানো হয়।

এ সময় বাজার অস্থিতিশীল করে তোলা এবং অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে অবৈধভাবে ১০০টি ড্রামে ২০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল মজুদ রাখার অপরাধে তাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

তিনি আরও বলেন, এ সময় মজুদকৃত তেল আগামী ৫ দিনের মধ্যে সরকারি বাজার মূল্যে বিক্রি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্যথায় গুদাম স্থায়ীভাবে সিলগালা করে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এছাড়াও হুমায়ুন কবির লাইসেন্স বিহীন অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা ও গুদামজাত করার অপরাধে তাকে প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হয়। তার ব্যবসায়ীক লাইসেন্স আগামী ৫ কর্ম-দিবসের মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জনস্বার্থে এই অভিযান চলমান থাকবে।

আরও পড়ুনঃ