
সশস্ত্র বাহিনীর হাজার হাজার দেশপ্রেমিক বীর মুক্তিযোদ্ধা সদস্যকে হত্যাকারী জিয়াউর রহমানের গড়া দল বিএনপি ও তার নেত্রী খালেদা জিয়ার চরিত্র এক ও অভিন্ন। জিয়া বিএনপি সৃষ্টি করেছিলেন রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে রাজনীতি করতে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করে স্বাধীনতাবিরোধীদেরকে সাথে নিয়ে পাকিস্থানের ভাবধারায় দেশ পরিচালনা করতে।
সেজন্য ক্ষমতায় বসে প্রথমেই জিয়া জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারকে নৃশংসভাবে হত্যাকারী সেই ঘাতক ও হাজার হাজার যুদ্ধাপরাধীদের দায়মুক্তি দিয়েছেন।
পাকিস্থানি সেনাবাহিনীর আজ্ঞাবহ এবং গণহত্যাকারী রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস সদস্যদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে অপরাধের তথ্য-প্রমাণ থাকলেও তাদেরকে কারামুক্তি দিয়েছেন খুনি জিয়া। কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আযমকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বাংলাদেশি পাসপোর্ট প্রদান, রাজাকারকে প্রধানমন্ত্রী বানানো- সবই করেছেন জিয়া।
আরো পড়ুন : খুনি চক্রকে রক্ষা করেছে জিয়া, এরশাদ ও খালেদা সরকার
অতঃপর বিএনপিকে সংগঠিত করতে গিয়ে যুদ্ধাপরাধী-জঙ্গিদের সাথে হাত মিলিয়েছেন খালেদা। ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে বিরোধী দল ও মত দমন, রক্ত, প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি করে জিয়ার মতোই বাংলাদেশকে ভুল পথে পরিচালিত করেছেন খালেদা জিয়াও। জিয়া ও খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে এমনটাই মন্তব্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
জিয়া ও খালেদা জিয়ার অপশাসনের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক একজন অধ্যাপক বলেন, জিয়ার শাসনামলে দেশ অন্ধকারাচ্ছন্ন অধ্যায়ে প্রবেশ করে। ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে জিয়া শুরু করেন বিনা বিচারে সেনা সদস্য, বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের হত্যা।
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার না করে উল্টো তাদের পুরস্কৃত করেন জিয়া। স্বাধীনতাবিরোধীদের দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের রাজনীতি করার সুযোগ দেন। দেশে মাদক, জুয়ার বিস্তার লাভ করে জিয়ার শাসনামলে। মূলত জনগণকে রাজনীতি বিমুখ ও রাজনৈতিক অপশাসন থেকে ভুলিয়ে রাখতেই মাদক-জুয়ার প্রসার ঘটান জিয়া।
প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের সহমর্মিতা পেতে জিয়া ধর্মীয় রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতা করেন। দেশকে পাকিস্থানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নিতে সকল অপকর্ম করেন স্বৈরশাসক জিয়া।
এই অধ্যাপক আরো বলেন, জিয়ার রাজনৈতিক আদর্শকে ধারণ করে বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে ধ্বংসের পথে হাঁটেন খালেদা জিয়া। যুদ্ধাপরাধী জামায়াতকে রাজনৈতিক সঙ্গী বানিয়ে দেশে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটান। খালেদা জিয়ার প্রচ্ছন্ন মদদে দেশে বিরোধী দল দমনে রক্তপাতের রাজনীতি শুরু করেন তারেক রহমানও।
যুদ্ধাপরাধ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের মতো রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে খালেদা জিয়া ক্ষমতা ধরে রাখতে ভুল পথে পা দেন। তার রাজনৈতিক ভুলের সুযোগ নিয়ে তারেক রহমান হয়ে ওঠেন আরো বেপরোয়া। দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের কারণে আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্কের মুখে পড়ে বিএনপি-জামায়াত সরকার। পুনরায় অন্ধকার পথে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ।
কিন্তু সেই যাত্রা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। মানুষ মুখ ফিরিয়ে নেয়ায় বেকায়দায় পড়ে বিএনপি। আবারও সঠিক পথে ফিরতে শুরু করে বাংলাদেশ। মাঝখানে খুন ও রক্তপাতের রাজনীতি করার ফল ভুগছে বিএনপি, ব্যর্থতার অতল গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে দলটি।
আরো পড়ুন : জিয়ার আমলে সশস্ত্র বাহিনীতে কতজনকে হত্যা করা হয়েছিল?