
১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্টে সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা এবং ৩রা নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যাকাণ্ডের পর লাইমলাইটে আসা নেপথ্য কারিগর ও সুবিধাভোগী জিয়াউর রহমান বিএনপির জন্মদাতা। জন্মলগ্ন থেকেই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চলেছে দলটি। কখনও একা, কখনও যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী জামায়াতকে নিয়ে।
দেশবিরোধী বিএনপি-জামায়াতের হাত ধরে দেশ ছুটেছিল পেছনের দিকে। দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বরাবরই চক্ষুশূল ছিলেন দেশবিরোধীদের। তাই বারবার তাঁর ওপর হামলা হয়েছে। ব্যর্থ হয়ে তারা দ্বারস্থ হয়েছে বিদেশি প্রভুদের।
তাদের মদদে বিএনপি ক্ষমতা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে পেছনের রাস্তা দিয়ে। যার অংশ হিসেবে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি, আগুন সন্ত্রাস করে হাজারো নিরীহ মানুষকে হত্যা করে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করতে বিদেশি প্রভুদের কাছে তদ্বির চালায় বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে।
তবে এসব আন্তর্জাতিক তদ্বির কখনই ‘অনুরোধের আসর’ নয়। তাদের ফি অকল্পনীয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং পণ্য রপ্তানির অনেক বড় বাজার; তাই মার্কিন মুল্লুকেই বিএনপি দ্বারস্থ হয় ভাড়ায় চালিত কিছু লবিস্ট ফার্মের। যারা অর্থের বিনিময়ে জাতিসংঘসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে নিজেদের কলকাঠি নাড়তে সক্ষম।
সেসব প্রতিষ্ঠানের সাথে অগ্রিম অর্থ প্রদানের মাধ্যমে বিএনপি ও তাাদের দোসররা চুক্তি করে। যেসব কাজের জন্য চুক্তিগুলো সম্পাদিত হয়েছিল বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের ঠিকানা ব্যবহার করে, সব তদ্বির এবং দাবিই ছিল দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের একেকটি নীলনকশা।
বিএনপি-জামায়াতের লক্ষ্য ছিল- দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ বন্ধ এবং নিষিদ্ধ ঘোষণার মাধ্যমে অকার্যকর করে আগুন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের পথ উন্মুক্ত করা, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে সম্পৃক্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ, জিএসপি সুবিধা বাতিল করার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি এবং হাজার হাজার কল-কারখানা বন্ধ করা, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ণ করার জন্য বিভিন্ন গুজব প্রচার, আওয়ামী লীগ সরকারের নীতি-নির্ধারক মহলের সর্বোচ্চ কর্তা ব্যক্তিদের বিভিন্ন দেশে যাতায়াত বন্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ, অর্থনীতি ও বাণিজ্য বিষয়ক নিষেধাজ্ঞা আরোপ, বাংলাদেশের নির্বাচনে বিদেশি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে পুতুল সরকার বসানো, দেশের খনিজ সম্পদ বিদেশি প্রভুদের হাতে তুলে দেওয়ার বিনিময়ে ক্ষমতায় বসিয়ে দেওয়া… ইত্যাদি।
চুক্তিপত্রগুলোর কপি সংবাদের নিচে সংযুক্ত করা হলো।
বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠী এবং তাদের নিয়োজিত লবিস্ট ফার্মগুলোর ষড়যন্ত্রের সারসংক্ষেপ:
মার্কিন বিচার বিভাগের অন্তর্গত ফরেন এজেন্টস রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট-ফারা’র আওতায় দেশি-বিদেশি ব্যক্তি বা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান মার্কিন কোনো লবিস্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি উপস্থাপন করে মার্কিন মতামত, পলিসি, আইনকে প্রভাবিত করতে পারে।
২০১৫ সালে বিএনপি লবিস্ট ফার্ম Akin Gump-এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়। প্রতিষ্ঠানটির রেজিস্ট্রেশন নং- ৩৪৯২। এ কাজে একিন গাম্প-এর সাথে কাজ করার জন্য বিএনপি ব্রিটিশ আইনজীবী টবি ক্যাডম্যানকে নিয়োগ দেয়। একিন গাম্পের দায়িত্ব ছিল- মার্কিন রাজনীতিবিদ এবং সরকারের উচ্চমহলে বিএনপির প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা, যেন তারা বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে হস্তক্ষেপ এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে সক্ষম হয়।
একিন গাম্প চুক্তিপত্রে বিএনপিকে আশ্বস্ত করে, মার্কিন কংগ্রেস এবং সরকারের কার্যনির্বাহী পরিষদে তাদের নিজস্ব লোকজন রয়েছে। সেই সাথে মার্কিন সরকার এবং বিরোধীদলীয় নেতাদের মাধ্যমে বিভিন্ন ইস্যুতে কাজ করতে সক্ষম সংস্থাটি। হাউজ এবং সিনেটে কোনো বিল উত্থাপন করানোর মত দায়িত্বশীল লোকজন রয়েছে তাদের হাতে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর উচ্চমহলে কলকাঠি নাড়তেও সক্ষম বলে জানায় একিন গাম্প।
ঐ চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, একিন গাম্পকে মাসিক ৪০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ মার্কিন ডলার (কাজের পরিধি অনুসারে) প্রদান করার চুক্তি হয়। কাজ শুরুর আগেই বিএনপি তাদের কাছে ১,২০,০০০ মার্কিন ডলার জমা দিয়ে রাখে। ২০১৭ সাল পর্যন্ত উক্ত কাজের মেয়াদ ছিল। যদিও সেই মেয়াদে বাংলাদেশ সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে কোনো কিছুতেই সফল হতে পারেনি বিএনপি-জামায়াতের ভাড়ায় চালিত ফার্মগুলো।
প্রথমবার ব্যর্থ হয়ে, ২০১৮ সালে বিএনপি একসাথে দুটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে। সেসময় FARA-তে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পরপর দুবার ভুয়া তথ্য দাখিল করে বিএনপি। লবিস্ট ফার্ম দুটির একটি বোস্টনের Rasky Partners (রেজিস্ট্রেশন নং- ৬৫৮৬) এবং অন্যটি ওয়াশিংটনের Blue Star Strategies (রেজিস্ট্রেশন নং- ৬৫৮৭)।
তবে এবার বিএনপি আর দল হিসেবে নয়, আব্দুস সাত্তার নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে চুক্তি করে। চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়- ব্লু স্টার স্ট্র্যাটেজিস এবং রাস্কি পার্টনার্সকে যাবতীয় নথিপত্র প্রদান করেছে- বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি)। সেই চুক্তিতে মাসিক মোট ৫০,০০০ মার্কিন ডলার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এদের দায়িত্ব ছিল– তারা ক্লায়েন্টের (বিএনপি) পাঠানো বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কাজ করবে, যেভাবে বলা হবে, মার্কিন বড় গণমাধ্যমগুলোতে ঠিক সেভাবে তা প্রকাশের ব্যবস্থা করা হবে, সেসব গণমাধ্যমের সাথে বিএনপির সুসম্পর্গ গড়ে দেয়া, পরবর্তী কর্মপন্থা নিয়ে বৈঠক এবং এজেন্ডা অনুসারে মতামত প্রকাশ করা।
এছাড়া ২০১৯ সালে বাংলাদেশ নিয়ে বিভিন্ন ধরণের গুজব ও অপপ্রচার সম্বলিত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাক্ষর করা গাদাগাদা চিঠি পাওয়া যায়। ৭১০নং রাজাকাপুত্র মির্জা ফখরুল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে শুরু করে ফরেন অ্যাফেয়ার্সের হাউজ কমিটি, সিনেটের সাবকমিটি, ফরেন অপারেশনস, সিনেট কমিটি, হাউজ কমিটি, ফরেন রিলেশন বিষয়ক সিনেট কমিটি, পূবাঞ্চলীয় সিনেট সাবকমিটি, দক্ষিণ এশিয়া-মধ্য এশিয়া এবং সন্ত্রাসবাদবিরোধী কমিটি, এশিয়া বিষযক সাবকমিটিসহ বিভিন্ন দপ্তরে দফায় দফায় চিঠি লিখেছেন।
মির্জা ফখরুল মার্কিন প্রশাসনকে ধন্যবাদ দিয়ে লিখেছেন- সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে যে নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রশাসন, তাতে বিএনপি খুশি হয়েছে। দেশের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবেদনের জন্য তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন!
আরেকটি চিঠিতে তিনি মার্কিন সরকারের প্রতি দাবি তুলেছেন বাংলাদেশকে মার্কিন সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন সুযোগ-সহায়তার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখার জন্য। অর্থাৎ বাংলাদেশে মার্কিন সহায়তা বন্ধ করে দেয়া হোক! কী অদ্ভূত এই দলটির চিন্তা-ভাবনা!
এবার দেখা যাক জামায়াতে ইসলামীর লবিস্ট নিয়োগ বিষয়ে।
লবিস্ট ফার্মগুলোকে জামায়াতের অর্থায়ন বিষয়ে মোট ৪টি নথি পাওয়া যায়। ২০১৪ সালের রেজিস্ট্রেশন নং-৬২১৮ ও ৬২১৯, ২০১৫ সালের রেজিস্ট্রেশন নং-৬২৭২, ২০১৬ সালের রেজিস্ট্রেশন নং-৬৩৩৬ এবং ২০১৮ সালের রেজিস্ট্রেশন নং-৬৫১৭।
[বিএনপি কি আইনের উর্ধ্বে? দেশদ্রোহিতার দায়ে কেন নিষিদ্ধ হবে না বিএনপি]
রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখে এটা পরিস্কার, একের পর এক ব্যর্থ হয়ে জামায়াত লবিস্ট ফার্ম বদলেছে। এদের ওয়াশিংটনভিত্তিক লবিস্ট ফার্মগুলো যথাক্রমে- KGGlobal, Cassidy & Associates, Cloakroom Advisors ও Husch Blackwell Strategies। সবগুলো চুক্তিতেই প্রতিষ্ঠানের নাম দেয়া আছে “Organization for Peace and Justice” (প্রকৃত অর্থ- শান্তি কমিটি)। এটি নিউইয়র্কে একটি অবাণিজ্যিক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধিত।
জামায়াতের পক্ষে চুক্তিগুলিতে স্বাক্ষর করেছেন জনৈক জিয়াউল ইসলাম। মূলত ব্যক্তি পরিচয় আড়াল করতেই একটি ছদ্ম নাম ব্যবহার করা হয় বলে ধারণা।
চুক্তিতে প্রদত্ত দায়িত্বগুলো হলো- জামায়াত নেতৃবৃন্দের (যুদ্ধাপরাধী) প্রতি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সহানুভূতি সৃষ্টি করা, তাদেরকে শান্তি এবং ন্যায়বিচার সংস্থার কর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। লক্ষ্য হচ্ছে যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের নেতৃবৃন্দের বিচার বন্ধ করে তাদেরকে মুক্ত করতে সহায়তা করা।
লবিস্ট ফার্মগুলোর ওপর অর্পিত দায়িত্বের আরও কিছু হলো- বাংলাদেশের ওপর মার্কিন চাপ তৈরি করা, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের উদ্দেশে মার্কিন কংগ্রেসকে দিয়ে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন করানো, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনি গ্রাহণযোগ্যতা বিনষ্টে বিভিন্নমুখী অপতৎপরতা চালানো, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে মানবাধিকার লঙ্ঘন তকমা দিয়ে মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে বিরোধিতা করানো ইত্যাদি।
এ কাজের জন্য জামায়াত Husch Blackwell Strategies-কে বাৎসরিক ১,৩২,০০০ মার্কিন ডলার ও Cassidy & Associates-কে মসিক ৫০,০০০ মার্কিন ডলার দিয়েছে।
জামায়াত-বিএনপির এসব কর্মকাণ্ড স্পষ্টভাবে রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে তাদের এসব কাজের ফলাফল ইতিমধ্যেই জাতি দেখেছে। আল-জাজিরার বানোয়াট নাটক এবং সাম্প্রতিক সময়ে র্যাবের ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এসবেরই প্রমাণ।
এসব চুক্তির বিনিময়ে বিএনপি এবং জামায়াতের নেতারা লবিস্ট ফার্মগুলোর হাতে তুলে দেয় মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার। বিএনপির নেতৃবৃন্দ এই বিপুল অর্থ সংকুলান করেছে কীভাবে? এসব অর্থের উৎস কী? তর্কের খাতিরে এসব অর্থকে বৈধ বলে ধরে নিলেও, এত বিপুল অংকের ডলার দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে কোন চ্যানেলে- এসব প্রশ্ন উঠেছে।
দেশের অর্থ-বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অগোচরে এত বিপুল অর্থ বিদেশে গেল কীভাবে? অবৈধ পথেই যা সম্ভব। যা মানি লন্ডারিং আইনে অনেক বড় একটি অপরাধ বলে বিশ্বব্যাপী বিবেচিত। এই অপরাধে কেন অপরাধী হিসেবে আইনের আওতায় আসবে না বিএনপি- এমন প্রশ্নও উঠছে।
বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন আইন অনুসারে, প্রতিটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকেই বছর শেষে আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিল করতে হয়। বিএনপি ২০১৫ সাল থেকে অকাতরে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে বিদেশি লবিস্টদের পেছনে, সেই অর্থের হিসাব কি তারা নির্বাচন কমিশনকে দিয়েছে? না দিলে কেন তাদের নিবন্ধন বাতিল হবে না? কেন বিএনপিকে মানি লন্ডারিংয়ের দায়ে বিচারের কাঠগড়ায় ওঠানো হবে না? তারা কি দেশের আইনের উর্ধ্বে?
এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন, লবিস্ট ফার্মের মাধ্যমে বিএনপির ষড়যন্ত্রের মুখোশ উন্মোচিত হয়ে যাওয়ার পর তারা সরকারের বিরুদ্ধেও পাল্টা অভিযোগ তুলেছে। সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দেশের অর্থ খরচ করে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ দিয়েছে, এমন তথ্য তারা গণমাধ্যমে ফলাও করে বলে বেড়াচ্ছে।
সরকারও লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে- সত্য। তবে বিএনপির লবিস্ট ফার্ম এবং সরকারর নিয়োগ করা লবিস্ট ফার্মগুলোর মাঝে বেসিক পার্থক্য রয়েছে, কাজের ধারায় পার্থক্য রয়েছে, উদ্দেশ্যে পার্থক্য রয়েছে।
[বিএনপি কি আইনের উর্ধ্বে? দেশদ্রোহিতার দায়ে কেন নিষিদ্ধ হবে না বিএনপি]
বিএনপির লবিস্ট ফার্মগুলো কাজ করছে মূলত বাংলাদেশের ভবিষ্যত ধ্বংস করার জন্য। বিপরীতে সরকার রাষ্ট্রের অর্থ খরচ করছে দেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে উজ্জ্বল করতে। দেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্য, বিনিয়োগের সুবিধা, অর্থনৈতিক অগ্রগতি, বিশেষায়িত ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমদানিকারক দেশগুলোর কাছে তুলে ধরতে।
মার্কিন লবিস্ট ফার্মগুলো বৈধ লাইসেন্স নিয়ে সেদেশে কাজ করে। দেশটির সিনেটর এবং কংগ্রেসম্যানদের কাছে সরাসরি বৈদেশিক বিষয়ে আলাপের সুযোগ নেই বলে তাদেরকে নিজ নিজ দেশের বিভিন্ন বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য দিতে লবিস্ট ফার্মগুলোকে কাজে লাগায় বিভিন্ন দেশের সরকার। সিনেটর এবং কংগ্রসম্যানদের অফিসে প্রবেশাধিকার রয়েছে তাদের।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত : মার্কিন সংস্থাকে বিএনপির বিপুল অর্থায়নের নথিপত্র ফাঁস
আর তাই বাংলাদেশ সরকার বিজিআর নামক একটি স্বনামধন্য লবিস্ট ফার্মকে বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টর, রপ্তানিযোগ্য পণ্য, জয়বায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের ক্ষয়ক্ষতির হার, পর্যটনের সম্ভাবনা, যুদ্ধাপরাধীদের সম্পর্কে সঠিক দিয়ে বিচার প্রক্রিয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরা, বাংলাদেশের বিভিন্ন অর্জন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তুলে ধরা, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সুবিধাপ্রাপ্তির চেষ্টাসহ দেশের জন্য কল্যাণকর বিভিন্ন ইস্যুতে এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।
এখানে বিজিআর-এর সাথে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে সরাসরি বাংলাদেশ সরকারের সাথে। ধানমন্ডি কার্যালয়ের ঠিকানায় অবস্থিত আওয়ামী লীগের সাথে নয়। আর চুক্তির অর্থ বৈধ পথে অনুমোদিত পন্থায় যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসারেই পাঠানো হয়েছে। নাগরিকরা চাইলেই এ তথ্য সরাসরি তথ্য আইনের আওতায় চাইতে পারেন, জবাবদিহি করাতে পারেন সরকারকে।
আরও পড়ুনঃ প্যারাডাইস পেপারস কেলেঙ্কারিতে তারেক-কোকো
আর তাই, এখন একটাই গণদাবী, এহেন দেশদ্রোহী কর্মকাণ্ড এবং মানি লন্ডারিংয়ের মত জঘন্য অপরাধের দায়ে অবিলম্বে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল করে দলের নেতৃবৃন্দকে আইনের আওতায় আনা হোক।
এখনই সময়, জনগণকে সাথে নিয়ে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর। সময় এসেছে জনগণের সামনে তাদের মুখোশ খুলে দেওয়ার। পলাশীর প্রান্তরে এক মীর জাফরের হাতে এই বাংলা স্বাধীনতা হারিয়েছে। আর কোনো মির্জা ফখরুল বা মীর জাফরকে স্বাধীন বাংলার মাটিতে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেয়া যাবেনা।
আরও পড়ুনঃ
- র্যাব নিষিদ্ধের দাবি জানানো ভুঁইফোড় সংগঠনগুলো মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার সরাসরি অর্থায়নে পরিচালিত- জানুন তাদের বাংলাদেশ বিরোধীতার আদ্যপ্রান্ত
- আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোতে টাকা ঢালছে তারেক-জামায়াত
- জাতিসংঘে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের গৌরব ম্লান করতেই সক্রিয় দেশবিরোধী চক্র