তারেক

মৃত্যুশয্যায় শুয়ে পাঞ্জা লড়া খালেদা জিয়ার এখন জীবিত একমাত্র সন্তান তারেক রহমান, বড় ছেলেও বটে। কিন্তু মাকে নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের এক ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তারেক রহমান।

বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সরকার উৎখাতে খালেদা জিয়াকে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছেন তারেক রহমান। ইতিমধ্যে বিএনপি নেতাদের কাছে তার এই মনোভাবের কথা খোলামেলাভাবেই বলেছেন বলে বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন। তারেক রহমান

তারা এই পরিকল্পনার কথা শুনে তারেকের নির্মমতায়, নিষ্ঠুরতায় আঁতকে উঠেছেন। সূত্র বলছে, তারেক রহমান বিএনপি নেতাদের বলছেন খালেদা জিয়ার কিছু না হওয়া পর্যন্ত তিনি হাসপাতালেই থাকবেন। খালেদা সুস্থও হয়ে উঠলে, হাসপাতালে থাকার প্রয়োজনীয়তাও না থাকলেও তাকে রাখতে হবে। যতদিন না বিএনপির কার্যোদ্ধার হচ্ছে।

দলীয় সূত্রটি বলছে, তারেক রহমান বিএনপির অন্তত দুজন নেতাকে বলেছেন, চেয়ারপারসন যতদিন হাসপাতালে থাকবে ততদিনই বিএনপির লাভ, এই লাভের হিসাবও দিয়েছেন তারেক।

বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেছেন, তারেক মনে করেন, খালেদা জিয়া হাসপাতালে থাকলে মানবিক দিক বিবেচনা করেই বিএনপির আন্দোলনে সরকার বাধা দেবে না। কারণ এতে জনরোষের সৃষ্টি হতে পারে। জনগণ বিষয়টিকে মানবিক দৃষ্টিতে দেখেছে। এ কারণেই খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে রেখে আন্দোলন করার পক্ষে তারেক।

যদিও এভারকেয়ার হাসপাতাল সূত্র বলছে, খালেদা জিয়া টানা ২ মাস হাসপাতালে রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থার যতটা উন্নতি সম্ভব, ততটা রিকভার করেছেন তিনি। এমনকি খালেদা জিয়ার অবস্থা আগের চেয়ে অবনতি ঘটেনি, স্টেবল পজিশন বলা যায়।খালেদা

এরকম পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়াকে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে আর কতদিন হাসপাতালে রাখা হবে এটি একটি বড় প্রশ্ন। কিন্তু তারেক রহমান সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে হাসপাতালেই রাখতে হবে।

তারেক রহমানের দ্বিতীয় পরিকল্পনাটি আরও ভয়ঙ্কর। তারেক তার দলের নেতাদেরকে বলছেন, খালেদা জিয়ার যদি হাসপাতালে কিছু হয়ে যায়, তাহলে এটি সরকারের বিপক্ষে যাবে। জনগণকে বোঝাতে হবে, চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ বিনা চিকিৎসায় খালেদা জিয়া মারা গেছেন- এটা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ তারেককে টাকা না দেওয়ায় একে একে সব হারাচ্ছেন তৈমুর

এই ধারণাটি এর যদি জনগণের মধ্যে ঢোকানো যায় তাহলে দ্রুত সরকার পতনের আন্দোলনকে বেগবান করা যাবে বলে তারেক রহমান মনে করছেন। এরকম মনোভাবই তিনি কর্মীদেরকে বলেছেন। অর্থাৎ খালেদা জিয়াকে মৃত্যু পর্যন্ত হাসপাতালে শুইয়ে রাখা এবং স্বাভাবিক মৃত্যুও হলেও তা বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু প্রমাণের ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক খেলায় মেতেছেন লন্ডনে পলাতক তারেক। এ কেমন পুত্র- এমন প্রশ্ন খোদ বিএনপি নেতাদের!

তারেক রহমানের তৃতীয় পরিকল্পনায় বলা হচ্ছে, এখন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্যও বিদেশে যাওয়ার জন্য কোন দেনদরবার করা হবে না। অর্থাৎ তারেকের মামা শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যে আবেদন করেছিলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে সহানুভূতি কামনা করছেন, পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার জন্য ছোটাছুটি-দৌড়াদৌড়ি করছেন, এসব না করার জন্য তারেক রহমানের নির্দেশ দিয়েছেন।

[মায়ের অসুস্থতাকে পুঁজি করে ভয়ঙ্কর খেলায় মেতেছেন তারেক]

তারেক রহমান চাইছেন, খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হবে- এই দাবির সঙ্গে সরকার পতনের দাবিকে যুক্ত করার জন্য।

বিএনপির ঢাকা মহানগরের একজন প্রভাবশালী নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলছেন, আমরা যদি সরকারের কাছেই খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা এবং মুক্তির জন্য আবেদন করি, তাহলে তার পতন আমরা কীভাবে চাইবো? দুটি দাবিই তো সাংঘর্ষিক। কিন্তু তারেক রহমান তাদেরকে ধমক দিয়ে চুপ করিয়েছেন।

অর্থাৎ খালেদা জিয়া বিদেশে যাক সেটি আসলে তারেক চান না, খালেদা জিয়া বাসায় ফিরে যাক সেটিও তিনি চান না, খালেদা জিয়া সুস্থ হোক সেটিও কাম্য নয়। বরং অসুস্থ খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে রেখে তার মৃত্যুর অপেক্ষা করা এবং খালেদা জিয়ার লাশ নিয়ে রাজনীতি করাই এখন তারেকের প্রধান পরিকল্পনা।

আরো পড়ুনঃ