বিএনপি

বিএনপির মহাসচিব কে হচ্ছেন- এ নিয়ে নতুন করে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করা হয়েছে। সবার ধারণা, মির্জা ফখরুলই বাংলাদেশে বসে তার দল পরিচালনা করছেন। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে সাম্প্রতিক বিএনপির অফিসিয়াল প্যাডে একটি লিখিত চিঠি গেছে, যাতে স্বাক্ষর করেছেন পলাতক হারিছ চৌধুরী, যিনি নিজেকে বিএনপির সেক্রেটারি জেনারেল বা মহাসচিব হিসেবে দাবি করেছেন!

উল্লেখ্য, গত ৮ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে কয়েকজন সিনেটরকে বিএনপির পক্ষ থেকে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। ইংরেজিতে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার কথা বলছেন। রাজনৈতিক কারণে সরকার তাকে বিদেশে যেতে দিচ্ছে না বলে দাবি করা হয় চিঠিতে।

এই চিঠিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ১২ জন কংগ্রেসম্যান এবং ৮ জন সিনেটরকে দেওয়া হয়েছে। তারা যেন এ বিষয়ে মুখ খোলেন সেটির জন্য লবিং করা হচ্ছে। একই সাথে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের এমপি, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ গ্রুপসহ বিভিন্ন মহলে এই চিঠিটি পাওয়া যাচ্ছে। এই চিঠি পাঠানোর খবরটি জানার পর বিএনপির তৃণমূলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ফখরুল_১

তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির মহাসচিব হওয়া সত্ত্বেও হারিছ চৌধুরীর স্বাক্ষরে এবং তাকে মহাসচিব পরিচয় করিয়ে দিয়ে কেন এই চিঠি দেওয়া হলো সেটি নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে।

বিএনপির অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, বাংলাদেশে যে বিএনপি রয়েছে সেটি কি আসলে বিএনপির শাখা? আর আসল বিএনপির কার্যালয় কি তবে লন্ডনে দেখানো হচ্ছে আন্তর্জাতিক মহলকে? যে বিএনপির বিএনপির চেয়ারম্যান তারেক রহমান আর তার হাওয়া ভবন সিন্ডিকেটের পার্টনার হারিছ চৌধুরী এখন মহাসচিবের ভূমিকায়!

অনেকের মতে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বাদ দিয়ে হারিছ চৌধুরীকে দিয়ে এই চিঠি দেয়ার পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। তবে লন্ডনের একটি সূত্রের দাবি, মূলত হারিছ চৌধুরী চিঠিটি দিয়েছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুলের পক্ষে।

তাদের দাবি, যে কেউই দলের হয়ে কিংবা চেয়ারম্যানের নির্দেশে মহাসচিবের পক্ষে এমন চিঠি দিতে পারেন। আর যেহেতু হারিছ চৌধুরী এখন লন্ডনে অবস্থান করছেন, সেজন্য তিনিই চিঠিটি দিয়েছেন। হারিছ

যদিও অধিকাংশ বিএনপি নেতা এর সঙ্গে একমত নন। তাদের মতে, মির্জা ফখরুল বহাল তবিয়তে আছেন। তিনি স্বাক্ষর প্রদানে অক্ষম নন। তিনি যদি স্বাক্ষর প্রদানে সক্ষম হন, তবে তার নামেই চিঠি দিতে অসুবিধা কী। এর পেছনে অন্য কোনো রহস্য রয়েছে বলে ধারণা তাদের।

তবে কারো কারো মতে, যেহেতু মির্জা ফখরুল দেশে আছেন, আর দেশে থেকে এ ধরনের চিঠি যদি তিনি দেন তাহলে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হতে পারে। এ কারণেই তার নামটি দেওয়া হয়নি।

তবে একটি পক্ষ বলছে, খালেদা জিয়া অসুস্থ হওয়ায় বিএনপির কার্যক্রম এখন আবর্তিত হচ্ছে লন্ডনকে কেন্দ্র করে। আর বাংলাদেশের বিএনপি পরিণত হয়েছে শাখায়। সেই হিসেবে শাখা বিএনপির মহাসচিব হলেন মির্জা ফখরুল, আর কেন্দ্রীয় বিএনপির মহাসচিব হলেন হারিছ চৌধুরী।

ধারণা করা হচ্ছে, বিএনপির আগামী কাউন্সিলে হারিছ চৌধুরীকেই উভয় শাখার একমাত্র মহাসচিব করতে চান তারেক রহমান, তাই এখন থেকেই শুরু হয়েছে তার প্রশিক্ষণ। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হয়ত দিন ফুরিয়েছে।